আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল মার্কিন কংগ্রেস। গত শনিবার দ্বিতীয়বারের মতো চীনা মালিকানাধীন অ্যাপটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়াকে আইনে পরিণত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’, যেখানে অ্যাপটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি হিসেবে দাবি করে আসছেন আইনপ্রণেতারা।
মার্কিন হাউজে বিলটির পক্ষে ভোট পড়েছে ৩৬০-৫৮। যেখানে উল্লিখিত একটি শর্তে টিকটকের মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্সকে এক বছরের মধ্যে কোম্পানি বিক্রি করে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে, না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সকল অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেলা হবে। তবে, এর পরও ব্যবহারকারীদের জন্য অন্যান্য উৎস থেকে অ্যাপে প্রবেশ করার সুযোগ আগের মতোই থাকবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বাইটড্যান্সের অ্যাপটি বিক্রি করে দেওয়ার যে কোনও ধরনের প্রচেষ্টা আটকে দিতে পারেন চীনা কর্মকর্তারা।
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাউজে শনিবারের অধিবেশনটি ছিল ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি সম্পূরক বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজ চালুর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সমন্বিত পাঁচটি আইন পাস করার এক বিরল প্রচেষ্টা। এর অংশ ছিল টিকটকের বিলটিও, যা পাস করার পক্ষে ছিলেন মার্কিন হাউজের দুই দলের অনেক সদস্যই। আর এর মধ্যে ছিল রাশিয়া ও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টিও। শনিবারের অধিবেশনে আরেকটি বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে, তা হল অভিবাসন বিল, যার বেশিরভাগক্ষেত্রে মিল রয়েছে গত বছর রিপাবলিকান হাউজের পাস করা ‘এইচ আর ২’ বিলের সঙ্গে।
মার্কিন হাউজে টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি বা একে চীনা মালিকানা থেকে সরে আসতে বাধ্য করার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ছিল এটি, যেখানে আইনপ্রণেতারা দাবি করে আসছেন, চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের কারণে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারা আমেরিকানদের স্পর্শকাতর ডেটায় প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে, এই যুক্তির পক্ষে এখনও জনসমক্ষে কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ উঠে আসেনি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইঙ্গিত দিয়েছেন, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আইনী নথিপত্র তার ডেস্কে পৌঁছালেই তিনি এতে স্বাক্ষর করে দেবেন। “তারা আইনটি পাস করলেই আমি এতে স্বাক্ষর দেব,” মার্চে সংবাদকর্মীদেরকে বলেছিলেন তিনি। যেহেতু সিনেটে দুই দলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের নেতারা এখন এর পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাচ্ছেন, তাই বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বাইডেন বিলটিকে আইনে পরিণত করার নথিতে স্বাক্ষর করলে কোম্পানিটির জন্য নতুন ক্রেতা খুঁজতে বা বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে ১২ মাসের সময় পাবে বাইটড্যান্স। এদিকে, বিলটি পাস হলে কোম্পানি যে মামলা করবে, তা এক রকম নিশ্চিত। এর আগে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টাটি এসেছিল ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে।