আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাওহীদা ইসলাম ইলমাকে তেঁতুল খাওয়ানো কথা বলে ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়। এর দায়ে মোহাম্মদ আলী বাপ্পী নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মোঃ জাকারিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী বাপ্পী।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ বিকেলে গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাওহীদা ইসলাম ইলমাকে (৯) না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেন। এদিকে আসামি প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলী বাপ্পি নিজেই অটোরিকশা ও মাইক ভাড়া করে এলাকায় মাইকিং শুরু করেন। এতে বাদীর সন্দেহ সৃষ্টি হয়। আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন তথ্য না পেয়ে তাঁকে ছেড়ে দেন স্থানীয় লোকজন। এরপর ১৬ মার্চ বাপ্পীর বাড়ির পাশে ডাকাতিয়া নদীতে ইলমার মৃতদেহ কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
বাপ্পীকে পুনরায় জিজ্ঞাসা করলে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। সে জানায়, তেঁতুল খাওয়ানোর কথা বলে তাঁর ঘরে নিয়ে মুখে ও গলায় ওড়না পেচিয়ে ইলমাকে ধর্ষণ করে। শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ ভিকটিম তাওহীদ ইসলাম ইলমার পিতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে বাপ্পীকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইকবাল মনির আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ২ জুন বাপ্পীসহ একই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মোঃ মিজানের (২২) বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় আদালত। অপর আসামি মোঃ মিজানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত ও এপিপি অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত উক্ত রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন। আসামি পক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. আতিকুল ইসলাম আতিক বলেন- এ রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট ও ক্ষুদ্ধ। রায়ের কপি হাতে পেলে শীঘ্রই উচ্চ আদালতে আপিল করবো।