আলোর যুগ স্পোর্টসঃ জ্যামাইকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। অলআউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পেরেছে ১৬৪ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নাহিদ রানার বোলিং তোপে পড়ে ১৪৬ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গতি ও বাউন্সে নাকাল করেই ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ে ছোবল দিয়েছেন তিনি পাঁচ দফায়। নাহিদ রানা ১৮ ওভার বল করে মাত্র ৬১ রান দিয়ে তুলে নেন পাঁচ উইকেট। একটি মেইডেন ওভারও তুলে নেন তিনি। তার আগুন ঝরানো বোলিংয়ে ১৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। ছয় ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার নিজেকে রাঙান পাঁচ উইকেটে।
ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং গুঁড়িয়ে দিনের খেলা শেষে ২২ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার জানালেন, তার পরিকল্পনা ছিল একদমই সাধারণ। তিনি বলেন, প্রথমত ওপরওয়ালার শুকরিয়া আদায় করতে চাই, প্রথমবার পাঁচ উইকেট পেয়েছি। বেশি কিছু চেষ্টা করিনি। শুধু চেষ্টা করেছি, ব্যাটসম্যানকে জায়গা না দিয়ে কীভাবে ‘লাইন টু লাইন’ বোলিং করা যায় এবং কোন পরিস্থিতিতে কোন ব্যাটসম্যানকে কীভাবে বোলিং করা যায়, সেই বোলিংটা করার চেষ্টা করেছি। তিনি আরও বলেন, এই উইকেটে বেশি কিছু চেষ্টা না করে শুধু ‘লাইন টু লাইন’ বোলিং করে ব্যাটসম্যানকে জায়গা না দিয়ে রান ছাড়া বোলিং করলে ব্যাটসম্যানরা অনেক কিছু করার চেষ্টা করে। আমি মনে করি, বোলারদের অত কিছু চেষ্টা না করে ‘লাইন টু লাইন’ বোলিং করাই ভালো।”
নাহিদের বিশ্বাস, শেষ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলার মতো কিছু তারা করতে পারবেন। তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা এখন একটা ভালো জায়গায় আছি। এখান থেকে আমরা যদি আড়াইশর ওপরে যেতে পারি… চতুর্থ দিনে ব্যাটিং করা কঠিন হবে ব্যাটসম্যানদের জন্য। উইকেট একটু অন্যরকমের, অসম বাউন্স থাকবে, স্পিনে টার্ন থাকবে। কাজেই আমরা চতুর্থ দিনে ভালো কিছু একটা বের করব।
এদিন হাসান মাহমুদও দুর্দান্ত বোলিং করেন। ১১ ওভার বল করে চারটি মেইডেন তুলে নেন। মাত্র ১৯ রান দিয়ে পান দুই উইকেট। এছাড়াও তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন। বোলারদের তৈরি করে দেওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে এবার বড় লক্ষ্যেই ছুটছে মিরাজবাহিনী। সাদমান-মিরাজদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ইতোমধ্যে ২১১ রানের লিড নিয়ে জ্যামাইকা টেস্টে রীতিমত চালকের আসনে বাংলাদেশ।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) জ্যামাইকার কিংসটনের সাবিনা পার্কে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৯৩ রান। ১৮ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই অবশ্য দেখা মেলে সেই পুরোনো চিত্র। স্কোরবোর্ডে কোনো রান তোলার আগেই বাংলাদেশ হারায় ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে। তাকে ফেরান জেইডেন সিলস। প্রথম ওভারে উইকেট খোয়ালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৭ রান তুলে বিপদ সামাল দেন সাদমান ইসলাম ও ওয়ান ডাউনে নামা শাহাদাত হোসেন দিপু। আলজারি জোসেফের শিকার হওয়ার আগে দিপু করেন ২৬ বলে ২৮ রান। এরপর ক্রিজে আসা মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন সাদমান। ৭০ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার।
দলীয় ১১৭ রানে ৮২ বলে ৪৬ রান করে আউট হন সাদমান। তার বিদায়ের পর পরই ৪২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মিরাজ। এতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর লিটন দাস ও জাকের আলি মিলে চাপ সামাল দেন। ৪১ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে দলীয় ১৭৩ রানে ৩৪ বলে ২৫ রান করে আউট হন লিটন। লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকী খেলা শেষ করেন জাকের। তাইজুল ২২ বলে ৯ ও জাকের ৪৯ বলে ২৯ রানে অপরাজিত আছেন।