Thursday, October 23, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ-প্রতারণার অভিযোগে আমেরিকার আদালতে মামলা

গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ-প্রতারণার অভিযোগে আমেরিকার আদালতে মামলা

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ প্রতারণার এক মামলায় ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ডলার ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্র এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে আদানির বিরুদ্ধে এই ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। আদালতের এই পদক্ষেপ ৬২ বছর বয়সী ধনকুবের আদানির জন্য নতুন এক ধাক্কা, যার ব্যবসার সাম্রাজ্য ছড়িয়ে আছে বন্দর ব্যবস্থাপনা থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পর্যন্ত। উপ-সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মিলার বলেছেন, গৌতম আদানি ও তার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানির জন্য একটি কাজ পাওয়ার চেষ্টায় ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৫ কোটি ডলার ঘুষ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যে কাজ পেলে আগামী ২০ বছরে তাদের ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি লাভ হতে পারে।

বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযোগ গঠনের পর এ বিষয়ে আদানি গ্রুপের আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে আদানির ব্যবসা নিয়ে জটিলতা শুরু হয় ২০২৩ সালে, যখন বিনিয়োগ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চ তাদের এক প্রতিবেদনে এ গ্রুপের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযোগ আনে। সেখানে বলা হয়, আদানি গ্রুপ কয়েক দশক ধরে শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং তাদের হিসাব-নিকাশে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

গৌতম আদানিকে ‘কর্পোরেট জগতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজ’ আখ্যায়িত করা হয় ওই প্রতিবেদনে। এর জেরে পুঁজিবাজারে আদানির শেয়ারের বিরাট দরপতন ঘটে। জবাবে আদানি গ্রুপ তখন বলেছিল, হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনের যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলো ‘অসত্য এবং বিদ্বেষপূর্ণ’। তবে মার্কিন আইন কর্মকর্তারা বলছেন, আদানির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তাদের তদন্ত শুরু হয়েছিল আরো আগে, ২০২২ সালে। নানাভাবে তাদের অনুসন্ধান প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কোম্পানির ঘুষবিরোধী অনুশীলন, নীতি সম্পর্কিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বিবৃতি এবং ঘুষের তদন্ত নিয়ে ভুয়া প্রতিবেদন দেখিয়ে আদানি গ্রুপের কর্মকর্তারা বিভিন্ন মার্কিন কোম্পানি থেকে ঋণ ও বন্ডের মাধ্যমে ৩ বিলিয়ন ডলার তুলেছেন। মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রেয়ন পিস এক বিবৃতিতে বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে আমার অফিস বদ্ধপরিকর।”

মামলায় বলা হয়েছে, ঘুষের বিষয়টি এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেও একাধিকবার ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গৌতম আদানি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। আর এই ঘনিষ্ঠতা থেকে দুই পক্ষই লাভবান হচ্ছে বলে বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মে অ্যাটর্নি পদে নিয়োগ হয় সরাসরি প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলো। নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর সোশাল মিডিয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন গৌতম আদানি; বলেছিলেন, তার কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments