Thursday, November 21, 2024
Homeখেলা‘আমাদের এশিয়ার বড় বড় দলের সঙ্গেও জিততে হবে’

‘আমাদের এশিয়ার বড় বড় দলের সঙ্গেও জিততে হবে’

আলোর যুগ স্পোর্টসঃ লেফট উইংয়ে বল পায়ে মুগ্ধতা ছড়াতে পারেন ঋতুপর্ণা চাকমা। সদ্য শেষ হওয়া সাফে বাংলাদেশকে শিরোপা জেতানোর কারিগর নিজেও পরেছেন টুর্নামেন্টসেরা খেলোয়াড়ের মুকুট। যুগল আনন্দে ভাসতে ভাসতেই তাই ফিরেছেন দেশে। গতকাল দেশে ফেরার ফ্লাইট ধরার আগে কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা।

প্রশ্ন : শুরুতেই অভিনন্দন আপনাকে। দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতার আনন্দ কতখানি?

ঋতুপর্ণা চাকমা : এবারের টুর্নামেন্ট অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। ভারত-নেপাল অনেক শক্তিশালী দল। ওদের সঙ্গে জেতা সহজ ছিল না। আমরা সত্যিই অনেক কষ্ট করেছি। এই সাফল্য আমাদের সবার কঠোর পরিশ্রমের ফল। আমরা দিনের পর দিন খুব ভোরে অনুশীলন করেছি। তিন মাস কোনো ম্যাচও খেলতে পারিনি, শুধু অনুশীলন করেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো কম বড় ব্যাপার নয়। দেশবাসীর ভালোবাসা, দোয়া আমাদের সঙ্গে ছিল বলেই পেরেছি আমরা।

প্রশ্ন : ফাইনালের শুরুতে কিছুটা ছন্দহীন মনে হয়েছিল আপনাকে। কারণ কী?

ঋতুপর্ণা চাকমা : দেখুন, ফাইনাল ম্যাচ ছিল এটা। আর মাঠে এত পরিমাণ দর্শক ছিল যে আমরা নিজেরাই নিজেদের কথা শুনতে পাচ্ছিলাম না। কিছুটা হলেও তো চাপে ছিলাম। আর শুরুতে ওরা আমাকে সেভাবে সুযোগ দিচ্ছিল না। কয়েকজন মিলে আটকে রাখার পরিকল্পনা করেছিল।

প্রশ্ন : নেপালিরা সম্ভবত আপনাকে একটু বেশিই কড়া মার্কিংয়ে রেখেছিল।

ঋতুপর্ণা চাকমা : হ্যাঁ, প্রথমার্ধে একদমই খেলতে পারিনি। এমনভাবে আমাকে আটকে রেখেছিল যে বল নিয়ে এগোতেই পারছিলাম না। ওদের ডিফেন্ডাররা ভালোই পরিকল্পনা করে নেমেছিল। কিন্তু আমি সুযোগ খুঁজছিলাম শুধু। জানতাম যে সময় বাড়লে ওরা ক্লান্ত হয়ে যাবে। তখন আমাকে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আর সেটাই করলাম।

প্রশ্ন: আগের তুলনায় এবার নিখুঁত ফুটবল খেলেছেন আপনারা। দুই বছরের মধ্যে এতটা বদলে যাওয়ার রহস্য কী?

ঋতুপর্ণা চাকমা:  আমরা বাফুফে ভবনে সারা বছর ক্যাম্প করি। আমরা একসঙ্গেই থাকি সবাই। দলের মধ্যে যে সমন্বয়, সেটা খুবই ভালো। এটাও আমাদের সাফল্য পাওয়ার অন্যতম কারণ। আমরা নিয়মিত অনুশীলন করেছি, এতে অনেক উন্নতি হয়েছে আমাদের। আন্তর্জাতিক ম্যাচ কম পেলেও অনুশীলনটা আমাদের নিয়মিত ছিল।

প্রশ্ন: টাচলাইনের ওপর থেকে শট নিয়ে গোল করবেন এটা কি ভাবতে পেরেছিলেন?

ঋতুপর্ণা চাকমা: আমি তো গোলের জন্যই শট নিয়েছিলাম। কিন্তু এটা যে গোল হবে, সেটা ভাবিনি। তবে আমাকে গোলে শট নেওয়ার জন্যই ডাগআউট থেকে বলা হচ্ছিল। আমিও সুযোগ নষ্ট করতে চাইনি।

প্রশ্ন: গোলের পর যেভাবে উদযাপন করেছেন, সেটা নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। ওভাবে উদযাপন (নেপালি দর্শকদের চুপ থাকার ইশারা) করার কারণ কী?

ঋতুপর্ণা চাকমা: এটি আমার পূর্বপরিকল্পিত। ঠিক করেছিলাম, ফাইনালে গোল করতে পারলে এই উদযাপনটা করব। মাঠে অনেক দর্শক ছিল, সবাই আমাদের বিপক্ষে ছিল। গোটা স্টেডিয়ামকে চুপ করানোর জন্য ওই উদযাপনটা করেছি।

প্রশ্ন: সেমিফাইনালের আগে গোল পান না বলে আক্ষেপ করেছিলেন। এখন টানা দুই ম্যাচে গোল করলেন। আক্ষেপ নিশ্চয়ই আর নেই?

ঋতুপর্ণা চাকমা: অবশ্যই কোনো আক্ষেপ নেই। দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর চেয়ে বড় আনন্দের কী হতে পারে।

প্রশ্ন: টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। এমন কিছুর কি লক্ষ্য ছিল?

ঋতুপর্ণা চাকমা: না, না। যে আমি গোল পাই না, সেই হবে সেরা খেলোয়াড়- এমন ভাবনা কখনোই আমার ছিল না। যাক শেষ পর্যন্ত আমার ভাগ্যে ছিল, তাই পুরস্কার জিতেছি। খুব ভালো লাগছে। এই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো নয়।

প্রশ্ন: আরেকটি শিরোপা জিতে এলেন। এবার নিশ্চিত আপনাদের লক্ষ্যের পরিধি আরো বেড়ে গেছে?

ঋতুপর্ণা চাকমা: তা তো অবশ্যই। শুধু সাফ নিয়ে ভাবলে তো হবে না। আমাদের এশিয়ার বড় বড় দলের সঙ্গেও লড়াই করতে হবে, জিততে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments