আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ দেশত্যাগ করেছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেস। গ্রেফতার এড়াতে কয়েকদিন আত্মগোপনে থাকার পর শনিবার তিনি স্পেনে আশ্রয় চেয়ে দেশ ছেড়েছেন। ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্টের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় গত ২৮ জুলাই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদে বিজয়ী ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা এডমুন্ডো গঞ্জালেজ নিজেকে জয়ী দাবি করেন এবং মাদুরো তার বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করে আন্দোলন শুরু করেন।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সহিংস আন্দোলনের মুখে ভেনেজুয়েলায় রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। সহিংসতায় উস্কানির অভিযোগে মামলায় গঞ্জালেসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
ভেনেজুয়েলার ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে বলেছেন, কিছু দিন আগে কারাকাসে স্প্যানিশ দূতাবাসে ‘স্বেচ্ছায়’ আশ্রয় নেন এডমুন্ডো গঞ্জালেস। পরে তিনি স্পেন সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চান।
ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও জানিয়েছেন, বিরোধী নেতাকে নিরাপদে দেশত্যাগ করতে সম্মতি দিয়েছিল সরকার এবং সেই মোতাবেক তিনি চলে গেছেন। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস বলেছেন, গঞ্জালেস নিজের অনুরোধেই স্প্যানিশ বিমানবাহিনীর একটি প্লেনে দেশত্যাগ করেছেন।
এদিকে গঞ্জালেসকে স্পেনে চলে যেতে দিলেও ভেনেজুয়েলার নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানী কারাকাসে অবস্থিত আর্জেন্টিনা দূতাবাস ঘিরে রেখেছে। ওই দূতাবাসে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত ছয় ব্যক্তি কয়েক মাস ধরে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, আর্জেন্টিনার দূতাবাসের ভেতরে বসে তারা সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তবে ভবনের অভ্যন্তরে থাকা বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন, মাদুরো সরকার তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভেনেজুয়েলা সরকারের পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, দূতাবাসে অবস্থানরত আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বা অপহরণের যেকোনও প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কঠোর নিন্দার মুখে পড়বে।
জাতিসংঘ বলেছে, প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সরকার নির্বাচনের পর থেকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত ২৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করেছে। এতে দেশটিতে ‘ত্রাসের পরিবেশ’ বিরাজ করছে।