Sunday, November 24, 2024
Homeঅপরাধযাত্রাবাড়ী থানায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা

যাত্রাবাড়ী থানায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় আন্দোলনকালীন গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদারের (১৭) বাবা মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও একাধিক মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ ও র‍‍্যাব কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে ১৯৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে।

শেখ হাসিনা ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আমির হোসেন আমু, তাজুল ইসলাম, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, মোহাম্মদ এ আরাফাত, শ ম রেজাউল করিম, মহিউদ্দিন খান আলমগীর (মখা আলমগীর), আসাদুজ্জামান খান কামাল, আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. হাসান মাহমুদ, শাহজাহান খান, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জুনাইদ আহমেদ পলক প্রমুখ।

আসামিদের তালিকায় আরও আছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। মামলায় যেসব পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইকবাল হোসাইন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান, লালবাগ থানার ওসি-অপারেশন আতিকুল হক, লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম, শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল সিকদার ও ডিবির কয়েকজন কর্মকর্তা।

মামলায় যেসব সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, একাত্তর টিভির সাবেক বার্তা প্রধান সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, এটিএন নিউজের সাবেক বার্তা প্রধান মুন্নী সাহা, একাত্তর টিভির প্রিন্সিপাল করেসপন্ডেন্ট ফারজানা রুপা, একাত্তর টিভির চাকরিচ্যুত হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান। এছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসান খান নিখিল, সাবেক এমপি ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী বলেন, আমার ছেলে নাঈম হাওলাদার একাদশ শ্রেণির একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। গত ১৯ জুলাই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র ও সাধারণ জনতার সঙ্গে যাত্রাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হয়। তখন শেখ হাসিনার নির্দেশে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলার মানসে আসামিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিরীহ ছাত্রদের ওপর উপর্যুপরি এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। তারা পেট্রোল বোমা, ককটেল বিস্ফোরণ, হাত বোমা ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ছাত্র-জনতাকে কোপাতে থাকে। এজাহারে বাদীর ভাষ্য, এসময় আমার ছেলে নাঈম হাওলাদার বাম কাঁধের সামনের দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি করা হয়। বিকেল ৩টা ১২ মিনিটের দিকে নাঈম মারা যায়।

নিহত নাঈম হাওলাদারের বাবা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ১৪ দলের নেতাকর্মীদের সরাসরি নির্দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে পুলিশ, র‍‍্যাব ও বিজিবির কিছু উচ্ছৃঙ্খল, অসাধু, সুবিধাভোগী ও অতি উৎসাহী কর্মকর্তা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে সহস্রাধিক মানুষ নিহত এবং অগণিত মানুষ আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments