Saturday, November 23, 2024
Homeজেলার খবরদেশজুড়ে আনন্দ উল্লাস

দেশজুড়ে আনন্দ উল্লাস

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ বেলা ৩টা। সেনাপ্রধানের ভাষণের অপেক্ষা না করেই বেরিয়ে আসতে শুরু করে ছাত্র-জনতা। প্রতিটি গলির মুখ থেকে খন্ড খন্ড মিছিল। ছোট শিশু। কলেজ ড্রেস পড়া বালিকা। কপালে পতাকা বাঁধা তরুণ। সাদা চুলে মেহেদি পড়া বৃদ্ধ। একে একে সেই মিছিলে শরিক হচ্ছেন সবাই। গন্তব্য মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর।

মিরপুর ১, ২, ১১, ১২, ১৪ সব পথ আজ মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল এক পথে। সেই পথে আনন্দে উদ্বেলিত জনতার মুখ, সেই মুখে বিজয়ের স্লোগান। ভুয়া, ভুয়া ..! এই স্লোগান ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার। এই স্লোগান একজন   স্বৈরাচারের পতনের স্লোগান। এই স্লোগান আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীর রক্তের বদলা নেওয়ার স্লোগান। এই স্লোগান একটি বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্লোগান।

মায়ের হাত ধরে মিছিলে আসা ছোট্ট আসওয়াদ জানায়, সে খুব খুশি। খুনি সরকারের পতন হয়েছে। তার হাতে বাংলাদেশের পতাকা। কেবল ১৬ পেরুনো এক কিশোর জানাল, সে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছে দাদার মুখে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দের কথা শুনেছে। সে মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। বিজয়ের আনন্দ কেমন ছিল জানে না। তার মনে হচ্ছে, এই আনন্দ সেই মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের আনন্দের মতন। সে স্বাধীনতা যুদ্ধ বিজয়ের আনন্দ লাভ করছে।

মিছিলে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র। মিছিলে নানা পেশাজীবী। কেউ রিকশাচালক, কেউ মুদি দোকানদার, কেউ স্কুলের শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ গার্মেন্টস কর্মী। সবার চোখেমুখে বিজয়ের আনন্দ। রূপনগর আবাসিক এলাকা থেকে মিছিলে যোগ দেওয়া এক গার্মেন্টস কর্মী জানান, তিনি গত ১০ বছর ধরে ভোট দিতে পারেন না। এবার ভোট দিতে পারবেন। এটাই তার আনন্দের কারণ।

বেসরকারি কোম্পানির চাকরিজীবী আবদুল হান্নান জানান, শিক্ষার্থীর রক্তে রঞ্জিত খুনি সরকারের পতন হয়েছে। এটাই তার আনন্দ। তিনি আশা করছেন প্রতিটি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হবে। ন্যায়বিচার পাবে দেশবাসী। রিকশাচালক জলিল মিয়া এই প্রতিবেদককে দেখে উচ্চৈঃস্বরে জানাল, যারা দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছে। সব দুর্নীতিবাজের বিচার চায় সে। তাতেই সে খুশি।

মিছিলে এক দল তরুণ গোলাপ নিয়ে এলো। তারা উদ্বেলিত জনতার হাতে হাতে তুলে দিল সেই গোলাপ। আরেক দল তরুণ মুখে ফুঁ দিয়ে রঙিন ধোঁয়া উড়িয়ে দিচ্ছিল আকাশে। কেউ রিকশায়, কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ সিএনজিতে, কেউ প্রাইভেট কারে, কেউ পায়ে হেঁটে- সবাই রাজপথ ধরে ঘুরছিল। কখনো ২ নম্বর, কখনো ১০ নম্বর, কখনো পূরবী, কখনো মিরপুর ১২, পুরো সড়ক লোকে লোকারণ্য। বিজয়ের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য বাসাবাড়িতে কেউ নেই। বাসাবাড়িতে তখন কেউ ছিল না..।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments