আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ নিকোলাস মাদুরো তৃতীয় মেয়াদে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কাউন্সিল। মধ্যরাতে ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, মাদুরো ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী এডমুন্ডো গঞ্জালেজ পেয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোট।
৮০ শতাংশ ভোট গণনার ভিত্তিতে এই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কাউন্সিলের প্রধান এলভিস আমোরোসো ভেনিজুয়েলানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন নির্বাচনের ফলাফল মেনে চলেন এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন। পাশাপাশি তিনি ভোট গণনা ও ভোটিং সিস্টেমের বিরুদ্ধে ঘটানো তথাকথিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের তদন্তের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
আমোরোসো বলেছেন, ভোট শেষে আমরা প্রত্যাশা করছি প্রতিটি ভোট ন্যায্য ও স্বচ্ছভাবে গণনা হবে। আমরা নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাই তারা যেন বিস্তারিত ভোটের হিসাব প্রকাশ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। এদিকে, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব নিয়ে বিরোধী পক্ষ উদ্বিগ্ন। ৩০,০০০ ভোট কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। এটা বিরোধী প্রার্থীদের ফলাফল যাচাই করতে সমস্যায় ফেলছে। বিরোধী পক্ষের প্রতিনিধিরা দাবি করছেন, ৩০ শতাংশ ভোট কেন্দ্রের ফলাফলে গঞ্জালেজ মাদুরোকে হারিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ছয় ঘণ্টা পরেও ফলাফল ঘোষণা না হওয়ায় সরকারের ভিতরে গভীর বিতর্কের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বচ্ছতার দাবি
ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনার স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ব্লিঙ্কেন বলেন, ভোট শেষ হওয়ার পর, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে প্রতিটি ভোট ন্যায্য ও স্বচ্ছভাবে গণনা করা হয়। আমরা নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাই তারা যেন বিস্তারিত ভোটের হিসাব প্রকাশ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।
ফলাফল নিয়ে বিতর্ক:
ভেনিজুয়েলার নির্বাচন ফলাফল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংকট গ্রুপের সিনিয়র বিশ্লেষক ফিলিপ গ্যানসন অভিযোগ করেছেন যে, নির্বাচনের ফলাফল “চুরি হয়েছে”।
অল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্যানসন বলেন, “যা কিছু আমরা দেখেছি তা থেকে বোঝা যায় যে, সরকার ফলাফল কৃত্রিমভাবে তৈরি করেছে।” তিনি যুক্তি দেন যে, সরকার-নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কর্তৃপক্ষের দ্বারা ঘোষিত ফলাফল আসলে ভোটের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
এই অভিযোগের ফলে নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও অস্থির করে তুলছে।