আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার এই সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণও এবার প্রকাশ্যে আনলেন তিনি।বুধবার দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণে বাইডেন জানান, তিনি নতুন প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে চান। আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করতে এটাই সেরা উপায় বলেও দাবি করেন অশীতিপর এই রাষ্ট্রপ্রধান।
বয়স এবং শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে গুঞ্জনের মধ্যেই সম্প্রতি নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান ৮১ বছর বয়সি বাইডেন। পছন্দের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নাম প্রস্তাব করেন তিনি। গত সপ্তাহেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন বাইডেন। তারপর কিছু দিন তাকে নিভৃতবাসে থাকতে হয়েছিল। করোনাডমুক্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ফেরেন বাইডেন। বুধবার আমেরিকাবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি।
বাইডেন বলেন, “আমি ঠিক করেছি যে, নতুন প্রজন্মের হাতে আগামীর মশাল তুলে দিব। এটাই যুক্তরাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করার সেরা উপায়।” তিনি আরও বলেন, “আমি আমার কাজকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমি তার চেয়েও বেশি ভালোবাসি আমার দেশকে। আপনাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পেরেছি, এটা আমার জীবনে সৌভাগ্যের বিষয়।” নিজের বক্তব্যে আমেরিকায় গণতন্ত্রের ‘ঝুঁকি’র বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। জানান, বিপদে থাকা গণতন্ত্রকে রক্ষা করা যেকোনও খেতাবের চেয়ে বেশি জরুরি।
রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী তথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিভিশনে বিতর্কে বাইডেনের কথার খেই হারানো, মৃদু স্বরে বক্তব্য রাখা নিয়ে ডেমোক্র্যাট শিবিরে আলোচনা শুরু হয়। জানা গিয়েছিল, আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভসের প্রাক্তন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির মতো বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাট নেতা বাইডেনকে ‘দলের স্বার্থে’ প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান। সেই তালিকায় ছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।
প্রথমে ফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে দাঁড়ানোর বিষয়ে প্রত্যয় দেখালেও শেষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান বাইডেন। এদিকে, তাকে নিয়ে ডেমোক্র্যাট শিবিরে যাতে কোনও বিভাজন না থাকে, তা সুনিশ্চিত করতে চান বাইডেন। সেদিকেই ইঙ্গিত করে বুধবার বাইডেন বলেন, “কঠিন পরিস্থিতিতে আমার দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা প্রয়োজন।”
একই সঙ্গে আত্মপ্রশংসার সুরে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার কাজ, দেশে এবং বিদেশে আমার নানা নীতি এবং আমেরিকার ভবিষ্যতের জন্য আমার ভাবনা— সব কিছুই দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু গণতন্ত্র বাঁচানোর যাত্রায় এসব কিছু আগে আসতে পারে না।”