আলোর যুগ স্পোর্টসঃ প্রথম ম্যাচে বিধ্বস্ত হওয়ার ধাক্কা সামলে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ল স্কটল্যান্ড। প্রতিপক্ষের ভুলের সুবাদে শুরুতে গোলও পেয়ে গেল তারা। কিন্তু পারল না সেটাকে পুঁজি করতে, উল্টো করে বসল আরও বড় ভুল। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জমজমাট লড়াইয়ের ম্যাচটি শেষ হলো সমতায়। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে কোলনে বুধবার (১৯ জুন) রাতে সুইজারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। স্কট ম্যাকটমিনে স্কটিশদের এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা টানেন জেরদান শাচিরি।
আসরে দুই দলের শুরুটা হয় দুইরকম। উদ্বোধনী ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে ৫-১ গোলে উড়ে যায় স্কটল্যান্ড। ওইরকম শুরুর পর তাদের এমন লড়াকু পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয়। পুরো ম্যাচে বল দখলে সামান্য পিছিয়ে থাকলেও গোলের জন্য বেশি শট নেয় তারাই; তাদের ১২ শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে। আর সুইজারল্যান্ডের ১১ শটের চারটি থাকে লক্ষ্যে। হাঙ্গেরিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করা সুইজারল্যান্ড এদিন ম্যাচের শুরুতেই বড় ভুলটা করে বসে। তাদের কর্নার রুখে দিয়ে পাল্টা আক্রমণে ওঠে স্কটল্যান্ড।
সতীর্থের ব্যাকপাস পেয়ে জোরাল শট নেন ম্যাকটমিনে, বল যদিও গোলরক্ষক ইয়ান সমেরের সোজাসুজিই ছিল। কিন্তু মাঝপথে পা বাড়িয়ে দেন নিউক্যাসল ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার ফাবিয়ান শার, বল তার পায়ে লেগে দিক পাল্টে আশ্রয় নেয় জালে। খানিক পর অভাবনীয় এক ভুল করে বসে স্কটল্যান্ডও, সুযোগটা কাজে লাগাতে একটুও ভুল করেনি সুইজারল্যান্ড। নিজেদের সীমানায় নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়ার ফাঁকে লক্ষ্যহীন এক ব্যাকপাস দিয়ে বসেন অ্যান্থনি রল্সটন, প্রতিপক্ষের অমন উপহার পেয়ে ২০ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে সমতা টানেন শাচিরি।
পরের কয়েক মিনিটে ভালো দুইটি আক্রমণ করে সুইজারল্যান্ড, লক্ষ্যে শটও নেয়; কিন্তু সাফল্য ধরা দেয়নি। একবার তারা বল জালেও জড়ায়, সেটাও কাটা পড়ে অফসাইডে। পাল্টা আক্রমণে স্কটল্যান্ডও ছড়াচ্ছিল ভীতি, যদিও পরিষ্কার সুযোগ তারা তৈরি করতে পারছিল না। ৫৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেন ড্যান এনডোয়ে। ওয়ান-অন-ওয়ানে তাকে ঠেকাতে এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশ করেন সুইস ফরোয়ার্ড। এরপরই বড় এক ধাক্কা খায় স্কটল্যান্ড। চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার কিয়েরন টিয়েরনি।
দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে না দাঁড়ালে ৬৭তম মিনিটে ফের এগিয়ে যেতে পারত স্কটল্যান্ড। সেটপিস থেকে গোলের সুবর্ণ সুযোগ আসে; কিন্তু ছয় গজ বক্সের মধ্যে থেকে গ্র্যান্ট হ্যানলির হেড লাগে পোস্টে। ৮২তম মিনিটে আবারও বল জালে পাঠিয়েও গোল পায়নি সুইজারল্যান্ড। প্রতি-আক্রমণে ওয়ান-অন-ওয়ানে ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রিল এমবোলো, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান।
শেষ সময়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার নিশ্চিত সুযোগ পান ম্যাকটমিনে, খুব কাছ থেকে প্রয়্জোনীয় টোকাটাও দেন তিনি; কিন্তু দারুণ দৃঢ়তায় রুখে দেন মানুয়েল আকাঞ্জি। পুরো ম্যাচে রক্ষণে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য ম্যানচেস্টার সিটির এই ডিফেন্ডারই হন ম্যাচ সেরা। ‘এ’ গ্রুপে দিনের আরেক ম্যাচে হাঙ্গেরিকে ২-০ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে জার্মানি। দুই ম্যাচে স্বাগতিকদের পয়েন্ট ৬। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সুইজারল্যান্ড। স্কটল্যান্ডের পয়েন্ট ১। হাঙ্গেরি এখনও পয়েন্টের খাতা খুলতে পারেনি।