আলোর যুগ স্পোর্টসঃ আসর জুড়ে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানরা এবার পারলেন না তেমন বড় কিছু করতে। তবুও রাজস্থান রয়্যালসের হৃদয় ভেঙে আইপিএলের ফাইনালে জায়গা করে নিল প্যাট কামিন্সের দল।
চেন্নাইয়ে শুক্রবার (২৪ মে) আসরের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হায়দরাবাদের জয় ৩৬ রানে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ১৭৫ রানের পুঁজি গড়া দলটি রাজস্থানকে থামিয়ে দেয় ১৩৯ রানে।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে হায়দরাবাদের প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স। প্রথম কোয়ালিফায়ারে তাদের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরেছিল হায়দরাবাদ। রবিবার (২৬ মে) চেন্নাইয়েই হবে শিরোপার লড়াই।
ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এ নিয়ে তৃতীয়বার ফাইনালে উঠল হায়দরাবাদ। ২০১৬ সালে প্রথমবার ফাইনাল খেলেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল তারা। পরে দলটি ২০১৮ সালের ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরে যায়।
হায়দরাবাদের এদিনের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন শাহবাজ। ১৮ রান করার পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনে মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনে মাত্র ২৪ রানে ২ উইকেট নেওয়া অভিশেকের অবদানও কম নয়।
ব্যাট হাতে অবশ্য তেমন কিছু করতে পারেননি অভিশেক। হায়দরাবাদ ওপেনারকে ম্যাচের প্রথম ওভারেই ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট। উইকেটে গিয়েই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ১৫ বলে ৩৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রাহুল ত্রিপাঠি। চার বলের মধ্যে তাকে ও এইডেন মারক্রামকে ফেরান বোল্ট।
অনেকটা সময় ক্রিজে থাকা ট্রাভিস হেডকে ঝড় তোলার আগেই ড্রেসিং রুমে পাঠান সন্দিপ শার্মা। আগের ম্যাচে গোল্ডেন ডাক পাওয়া বিস্ফোরক ওপেনার ১ ছক্কা ও ৩ চারে করেন ২৮ বলে ৩৪ রান। ১০ ওভার শেষে হায়দরাবাদের রান ভালোই ছিল, ৪ উইকেটে ৯৯।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝেই দারুণ এক ফিফটি উপহার দেন ক্লসেন। ৪ ছক্কায় ৩৪ বলে ঠিক ৫০ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকান কিপার-ব্যাটসম্যান। তার ইনিংসেই মূলত ১৭০ পার করে হায়দরাবাদ।
রান তাড়ায় ধুঁকতে থাকা টম কোলার-ক্যাডমোরের অস্বস্তি থামান প্যাট কামিন্স। আরেক প্রান্তে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল। ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে ২১ বলে ৪২ রান করা ওপেনার বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন শাহবাজের বলে। পরের ওভারে অভিশেক ফিরিয়ে দেন সাঞ্জু স্যামসনকে।
এই দুই স্পিনার টিকতে দেননি রিয়ান পারাগ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও শিমরন হেটমায়ারকে। ৯২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে কিছুটা টানেন ধ্রুভ জুরেল। ২ ছক্কা ও ৭ চারে ৩৫ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা কেবল হারের ব্যবধানই কমায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ২০ ওভারে ১৭৫/৯ (হেড ৩৪, আভিশেক ১২, রাহুল ত্রিপাঠি ৩৭, মারক্রাম ১, ক্লসেন ৫০, নিতিশ ৫, সামাদ ০, শাহবাজ ১৮, কামিন্স ৫*, উনাদকাট ৫; বোল্ট ৪-০-৪৫-৩, অশ্বিন ৪-০-৪৩-০, সান্দিপ ৪-০-২৫-২, আভেশ ৪-০-২৭-৩, চেহেল ৪-০-৩৪-০)
রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৩৯/৭ (জয়সওয়াল ৪২, কোলার-ক্যাডমোর ১০, স্যামসন ১০, পারাগ ৬, জুরেল ৫৬*, অশ্বিন ০, হেটমায়ার ৪, পাওয়েল ৬, বোল্ট ০*; ভুবনেশ্বর ৩-০-৩৩-০, কামিন্স ৪-০-৩০-১, নাটরাজান ৩-০-১১-১, উনাদকাট ১-০-৫-০, শাহবাজ ৪-০-২৩-৩, আভিশেক ৪-০-২৪-২, মারক্রাম ১-০-১০-০)
ফল: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ৩৬ রানে জয়ী ,ম্যান অব দা ম্যাচ: শাহবাজ আহমেদ