Friday, October 18, 2024
Homeজাতীয়উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষমতাশীল দলের: টিআইবি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষমতাশীল দলের: টিআইবি

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মো ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষমতাশীল দলের। অনেকেই ক্ষমতাশীলদের আত্মীয় স্বজন। প্রার্থীদের মধ্যে পুরুষের অধিক্য রয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য একই রকম। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী। বিশেষ করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হলফনামায় যেসব তথ্য রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যতটুকু আছে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। রাজনীতির সঙ্গে সম্পদ বৃদ্ধির একটি যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতা ও আয় বৃদ্ধির সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে। যে কারণে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারছে না।

আজ ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব কথা বলেন তিনি। দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৬০ উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে পেশা হিসাবে ব্যবসায়ীদের আধিক্য রয়েছে। এ পর্যায়ে দ্বিতীয় ধাপে পেশা হিসাবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০.৫১ শতাংশ ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৮.৭৩ শতাংশ ব্যবসায়ী।

যেখানে প্রথম ধাপে পেশা হিসাবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০ শতাংশই ছিলেন ব্যবসায়ী, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৭ শতাংশ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৪ শতাংশ ব্যবসাকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় দাপে ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ১৫৭টির প্রার্থীর হলফনামা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে, বাকি তিনটি করেনি। প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া আট ধরনের তথ্যের বহুমাত্রিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

টিআইবির গবেষণা বলছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন দলীয় হলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। প্রথম ধাপের মত নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপেও অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের অধিকাংশই “আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী” এবং দলের স্থানীয় মন্ত্রী/এমপির সমর্থনপুষ্ট। বিএনপি এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও দলটি দ্বিতীয় ধাপেও স্থানীয় প্রার্থীদের আটকাতে পারেনি। দ্বিতীয় ধাপে ৬৪ জন আগ্রহী প্রার্থী দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েও স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন।

সার্বিক পর্যালোচনায় প্রতিষ্ঠানটির বলছে, ১০ বছরে একজন চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫৩৩৬ শতাংশ, ৫ বছরে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১০৯০০ শতাংশ। অন্যদিকে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ১১৬৬৬ শতাংশ, স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৮৯৬৮ শতাংশ। ৫ বছর হিসাবে অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা পেছনে ফেলেছেন সংসদ সদস্যদের। একজন সংসদ সদস্যের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৩০৬৫ শতাংশ, যেখানে একজন চেয়ারম্যানের বেড়েছে সাড়ে ১১০০০ শতাংশের বেশি।

প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও আলোচনায় আছেন মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মনোনয়ন। দ্বিতীয় ধাপের লড়াইয়ে চেয়ারম্যান পদে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন রয়েছেন ১৭ জন। জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও ব্যবসায়ী প্রার্থীদের দাপট অক্ষুণ্ণ রয়েছে। ব্যবসায়ী প্রার্থীদের সংখ্যা চতুর্থ নির্বাচনের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭.৫৪ শতাংশ। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০.৫১ শতাংশই ব্যবসায়ী, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৮.৭৩ শতাংশ, নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৯.২৬ শতাংশ ব্যবসাকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৫১.৬৩ শতাংশই নিজেকে গৃহিণী বা গৃহস্থালি কাজকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments