Saturday, November 23, 2024
Homeঅপরাধ১৭ রোগীকে হত্যা: ৭৬০ বছরের কারাদণ্ড নার্সের

১৭ রোগীকে হত্যা: ৭৬০ বছরের কারাদণ্ড নার্সের

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ তিন বছরে ১৭ রোগীকে অতিমাত্রায় ইনসুলিনের ডোজ প্রয়োগ করে হত্যার দায়ে এক নার্সকে ৭৬০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন মার্কিন এক আদালত। ওই নার্সের নাম হেদার প্রেসডি (৪১)। আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি আদালত এই রাষ ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল— তিন বছরে অঙ্গরাজ্যের পাঁচটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। মামলার বিবরণীতে আরও জানা গেছে, এই তিন বছরে মোট ২২ জন রোগীকে প্রাণঘাতী ইনসুলিনের ইঞ্জেকশন দিয়েছেন হেদার প্রেসডি। তাদের সবার বয়স ৪৩ বছর থেকে ১০৪ বছরের মধ্যে। এই ২২ জন রোগীর মধ্যে মাত্র পাঁচজন বেঁচে গেছেন।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য রাতের বেলার শিফটকে বেছে নিতেন হেদার। যে ২২ জনের দেহে তিনি প্রাণঘাতী ইনসুলিনের ইঞ্জেকশন পুশ করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন এমনকি ডায়াবেটিসের রোগীও ছিলেন না।

দেহে অতিমাত্রায় ইনসুলিন প্রবেশ করানো হলে হাইপোগ্লিকেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা শূন্যের কাছাকাছি নেমে যাওয়া) নামের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যায় রোগী শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল বোধ করেন, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায় এবং যদি শিগগিরই চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য বা তরল গ্রহণ না করেন, তাহলে হার্ট অ্যাটাক ঘটার সমূহ আশঙ্কা থাকে।

গত বছর মার্চের দিকে পেনসিলভেনিয়ার এক হাসপাতালে দু’জন রোগীর পর পর মৃত্যুর পর হেদার প্রেসডির ওপর সন্দেহ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। পরে পুলিশকে তারা এ ব্যাপারে অবহিত করলে তদন্ত শুরু হয়। সেই তদন্তের এক পর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তারপর মে মাসে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার শুরুর প্রথম দিন বাদীপক্ষের আইনজীবী হেদারকে যখন প্রশ্ন করেন, আপনি নিজেকে দোষী দাবি করছেন, না নির্দোষ?’ জবাবে হেদার বলেন, ‘আমি দোষী।’ কেন তিনি নিজেকে দোষী দাবি করছেন— আইনজীবী জানতে চাইলে হিদার বলেন, “আমি দোষ করেছি। তাই আমি দোষী।”

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হেদার তার পরিচিত অধিকাংশ রোগী, সহকর্মী ও অন্যান্য লোকজনকে অপছন্দ করতেন এবং মনে মনে তাদের ক্ষতি করতে চাইতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মায়ের সঙ্গে নিয়মিত টেক্সট মেসেজে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। সেসব মেসেজে এসব ব্যাপারে মায়ের সঙ্গে কথা হতো হেদারের।

বিচার চলাকালে বাদীপক্ষের এক সাক্ষী হিদারের সম্পর্কে বলেছেন, “তিনি অসুস্থ নন, উন্মাদও নন; তবে অশুভ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। যে রাতে তিনি আমার বাবাকে খুন করেছেন, তার পরদিন সকালে তার মুখে আমি শয়তানের ছায়া দেখেছি।”

অভিযোগ প্রমাণের পরপরই হেদারের নার্সিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়। তার যেসব সহকর্মী আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন, তাদের প্রায় সবাই তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। তবে চাকরিক্ষেত্রে বেশ নিয়মানুবর্তী ছিলেন তিনি। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পেনসিলভেনিয়ার কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে কাজ করেছেন হেদার।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments