আলোর যুগ স্পোর্টসঃ গ্রেনাডা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩৩ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি রেখে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া।সেই ১৯৯৫ সালে রিচি রিচার্ডসনের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে স্যার ফ্র্যাঙ্ক ওরেল ট্রফি নিজেদের কাছে এনেছিলেন মার্ক টেইলরের অস্ট্রেলিয়া। সেই থেকে সেটি আর হাতছাড়া করেনি তারা। এই ৩০ বছরে ১৪ সিরিজের ১২টিই জিতেছে অস্ট্রেলিয়ানরা, ড্র হয়েছে দুইটি।
টেস্টের চতুর্থ দিনে রবিবার (৬ জুলাই) ২৭৮ রানের লক্ষ্যে ১৪৩ রানেই শেষ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার সব বোলার ভাগাভাগি করে নেন উইকেটগুলো। এদিন ৪১.৩ ওভারেই পতন হয় ১৩ উইকেটের। ৭ উইকেটে ২২১ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় আর কেবল ২২ রান যোগ করেই। ২৬ রান নিয়ে শুরু করে অ্যারেক্স কেয়ারি বিদায় নেন ৩০ রানেই। লোয়ার অর্ডারও দলকে টানতে পারেনি বেশি দূর।
আগের দিনের দুই উইকেটের সঙ্গে এদিন আরও দুইটি যোগ করেন শামার জোসেফ। সিরিজের দুই টেস্টে তার উইকেট হলো ১৪টি। ১০ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে তার উইকেট সংখ্যা এখন ৪৩। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার টেস্টেই উইকেট ২৭টি! রান তাড়ায় শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং। দ্বিতীয় ওভারেই জন ক্যাম্পবেলকে শূন্য রানে ফেরান জশ হেইজেলউড। তিনে নামা কেসি কার্টিকে দ্রুত ফেরান মিচেল স্টার্ক। বাউ ওয়েবস্টার আক্রমণে এসে বিদায় করেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে। শততম টেস্টে তার রান ০ ও ৭।
সিরিজের চার ইনিংসে তার রান ১৫। গত বছরের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে এই সিরিজ পর্যন্ত ২৮ ইনিংসে তার ফিফটি স্রেফ দুটি। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের জায়গা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে তুমুল। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রান করা ব্র্যান্ডন কিং এবার ১৪ রানেই বোল্ড কামিন্সের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৪ উইকেটে ৩৩।
পঞ্চম উইকেটে শেই হোপ ও রোস্টন চেইস যোগ করেন ৩৮ রান। আর কোনো জুটি ৩০ ছুঁতে পারেনি। দুই ছক্কায় ৩৪ রান করা অধিনায়ক চেইসকে ফেরান স্টার্ক। শেষ দিকে দুটি ছক্কা মারেন আলজারি জোসেফ, তিন ছক্কায় ২৪ করেন শামার জোসেফ। শেষ তিন উইকেটই নেন ন্যাথান লায়ন। গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম টেস্ট বোলার হতে তার প্রয়োজন আর কেবল দুই উইকেট। বোলারদের দাপটের ম্যাচে ৬৩ ও ৩০ রান করে ম্যাচের সেরা অ্যালেক্স কেয়ারি।
সিরিজের শেষ টেস্ট জ্যামাইকায় শুরু শনিবার। ক্যারিবিয়ার দ্বিতীয় দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ হবে এটি। মিচেল স্টার্ক বিশ্রাম না পেলে সেটি হবে তার শততম টেস্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৮৬
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৫৩
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৭১.৩ ওভারে ২৪৩ (আগের দিন ২২১/৭) (কেয়ারি ৩০, কামিন্স ৪, স্টার্ক ১৮, হেইজেলউড ৪*; সিলস ১৬-২-২৯-২, শামার ১৬-১-৬৬-৪, আলজারি ১৬.৩-২-৫২-২, ফিলিপ ৯-০-৩২-০, চেইস ৫-০-২৯-০, গ্রেভস ৯-০-২২-২)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৭) ৩৪.৩ ওভারে ১৪৩ (ব্র্যাথওয়েট ৭, ক্যাম্পবেল ০, কার্টি ১০, কিং ১৪, চেইস ৩৪, হোপ ১৭, গ্রেভস ২, আলজারি জোসেফ ১৩, শামার জোসেফ ২৪, ফিলিপ ১১*, সিলস ৮; স্টার্ক ৮-২-২৪-৩, হেইজেলউড ৮-২-৩৩-২, কামিন্স ৮-১-২৬-১, ওয়েবস্টার ৫-১-১৫-১, লায়ন ৫.৩-১-৪২-৩)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ১৩৩ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-০ ব্যবধানে গিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যালেক্স কেয়ারি।