Saturday, April 26, 2025
Homeঅপরাধলিবিয়ায় ২৭ জনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়কারী গ্রেফতার

লিবিয়ায় ২৭ জনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়কারী গ্রেফতার

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জিম্মি ও নির্যাতন করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূল হোতা জাহিদ হোসেনকে (২৭) নওগাঁ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৫। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নওগাঁর রাণীনগর থানার সিংগারা পাড়া এলাকায় তার বাড়ি থেকে জাহিদ হোসেনকে গ্রেফতার করে।

শুক্রবার বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানান, ভিকটিম ইয়াকুব আলীর (৩৮) সঙ্গে দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাহিদ হোসেনের পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্রে জাহিদ, ইয়াকুবকে জানায় যে, সে ইতালী প্রবাসী। ইতালীতে তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। বাংলাদেশের অনেক মানুষ তার মাধ্যমে ইতালিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইতালীর শ্রম বাজার, উচ্চ বেতন, শ্রমিকদের বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি আছে। ইয়াকুব আসতে আগ্রহী হলে, জাহিদকে তার চাচা এহরাম সরদার (৪০) ও প্রতিবেশি চাচা বাবু মোল্লার (৫২) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট ইয়াকুব এহরাম সরদারের বাড়িযে যায়।

একই দিন জাহিদ হোসেন মোবাইল ফোনের ভিডিওকলে ভার্চুয়ালী আলোচনার মাধ্যমে ইতালী যাওয়ার খরচ বাবদ ২০ লাখ টাকার প্যাকেজে নির্ধারণ করে। তার মধ্যে আগাম ৫ লাখ ও ইতালী পৌঁছে কাজে যোগদান করার প্রথম সপ্তাহে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা হয়। দেশে অবস্থানরত বাবু মোল্লার কাছে জমা দেওয়ার আলাপ চূড়ান্ত হয়। ৫ লাখ টাকা পরিশোধের তিন মাসের মধ্যে জাহিদ বাদীকে (ইয়াকুব) ঢাকা থেকে দুবাই এবং দুবাই থেকে ইতালি নিয়ে যাবে।

২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ইয়াকুব সহ ২৭ জন ভুক্তভোগী দুবাই পৌঁছায়। দুবাই থেকে বিমানে নাইজার নিয়ে সড়ক পথে আলজেরিয়া যাওয়ার পর আলজেরিয়া পুলিশ তাদের সবাইকে ধরে নিয়ে গেলে তারা ২১ দিন জেল খাটে। জেল হতে মুক্তি পাওয়ায় পর আবদুল মান্নান ও জাহিদ তাদের সবাইকে নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা ২৭ জনকে আলজেরিয়া থেকে সড়ক পথে তিউনিশিয়া নেয়। তিউনিশিয়া থেকে লিবিয়া নিয়ে তাদের সবাইকেই একটি বাড়িতে জিম্মি করে। জাহিদের নেত্বত্বে জিম্মিদের অমানষিকভাবে নির্যাতন করে ও পড়নের কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে এবং ভিডিও ধারণ করে দেশে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠায়। সেই সঙ্গে হত্যার হুমকি দেয় এবং মুক্তিপণ দাবি করে। জীবন বাঁচাতে ইয়াকুবের পরিবার বিভিন্ন মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা দেন।

লিবিয়ার বন্দী দশা থেকে মুক্তি চান ২৭ জন এমন সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে লিবিয়ায় অবস্থিত দূতাবাসে কর্মরত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মো. খাইরুল বাশার তাদের উদ্ধার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। দেশে ফিরে ইয়াকুব এ বছরের ৯ জানুয়ারি মামলা করেন। মামলার পর র‌্যাব আসামী গ্রেফতারে তৎপর হয়। গোপনে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জাহিদ হোসেনকে গ্রেফতার করে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments