আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নামে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড চাইবে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বুধবার রাত ৯টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। ডিবি প্রধান বলেন, ‘মানবিকতার আড়ালে ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন মিল্টন। প্রকৃতপক্ষে তিনি যে কয়জনকে লালন-পালন করছেন, প্রচার করছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ। লাশ দাফন করার যে হিসাব দিচ্ছেন, তাতেও আছে বিরাট গরমিল। সবচেয়ে ভয়ংকর, মিল্টনের বিরুদ্ধে রয়েছে অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার নামে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে মানবসেবার অন্তরালে যে নির্মম ও বর্বরোচিত চিত্র ফুটে উঠেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। মানবসেবা পরম ধর্ম কিন্তু মানব সেবার নামে মুখোশের আড়ালে রাস্তা থেকে অসুস্থ, অসহায় ও নিরীহ মানুষকে তুলে এনে চিকিৎসার নামে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির যে অভিযোগ মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে উঠেছে তা অত্যন্ত ভীতিকর, ন্যাক্কারজনক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।’ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালে না নিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে আটকে রাখা, ভুয়া ডাক্তার কর্তৃক মৃত্যুর সার্টিফিকেট তৈরি করা কিংবা মৃত লাশের শরীরে কাটাছেঁড়ার যে তথ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এসবসহ সকল অভিযোগ তদন্ত করা হবে।’
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মানবপাচার, নির্যাতনসহ প্রতারণার মামলা করা হবে। মিডিয়ায় যতো অভিযোগ এসেছে সব বিষয়েই তদন্ত করা হবে। এছাড়া রাতে কেনো লাশ দাফন করতেন এই বিষয়ে মিল্টন জানান- মানুষ তাকে প্রশ্ন করে তাই রাতে তিনি লাশ দাফন করতেন। এছাড়া মিল্টন সমাদ্দারের বক্তব্য অনুযায়ী ৯০০ দাফন করলেও ৮৩৫টি লাশের দাফনের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তিনি।’
তিনি বলেন, ‘মিল্টনের বিরুদ্ধে আমরা অজস্র অভিযোগ পেয়েছি। সে বলেছে তার দুটি আশ্রম রয়েছে। সাভারের আশ্রমে ৫ থেকে ৭ শত লোক রয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেখানে ২০ থেকে ৩০ জনের বেশি লোক নেই। আমরা তাকে নিয়ে এসেছি। কিছু অভিযোগকারী রয়েছে তারাও মামলা রুজু করবে। আমরা মিল্টনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবো কত সংখ্যক মানুষ তার কাছে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল। কত সংখ্যক মানুষ মারা গেল। তার আশ্রমে যে অপারেশন থিয়েটার রয়েছে এর মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করেছে কিনা সেটিরও তদন্ত করা হবে।’