আলোর যুগ স্পোর্টসঃ দীর্ঘদিন পর বড় ফরম্যাটে ফেরা সাকিব আল হাসানে উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল সমতায় সিরিজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামবে। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি শনিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে। প্রথম ম্যাচে বাজে হারের পর টেস্টে বাংলাদেশের পারফরমেন্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সাকিবের অন্তর্ভুক্তিতে টাইগাররা ঘুড়ে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে দুইশ’র নিচে অলআউট হয়ে ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। দলের বেশিরভাগ ব্যাটারই বাজে শট খেলে প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দিয়েছেন। দলের এমন পারফরমেন্সে মূলত টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তাদের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মমিনুল হকের লড়াকু ৮৭ রানের অনবদ্য ইনিংস বাংলাদেশকে আরও বড় হারের লজ্জা থেকে রক্ষা করে। চোখের সমস্যা থেকে সেরে উঠে পুরোপুরি ফিট হওয়ায় মাঠে নামতে প্রস্তুত সাকিব।
শনিবার যদি খেলতে নামেন তাহলে এক বছর পর প্রথমবারের মতো সাদা পোশাকে দেখা যাবে তাকে। গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পর থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে কোনো ম্যাচই খেলেননি সাকিব। দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকার পর ফেরাটা তার জন্য অবশ্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিংও হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর মতে, সাকিবের মতো চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। সব চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করে কিভাবে পারফর্ম করতে হয় সেটি বেশ ভালোই জানেন।
আয়ারল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে নিজের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজের শেষ চার ইনিংসে দু’টি ৮০’র বেশি রানের ইনিংস খেলেছেন সাকিব। তারপরও বড় চিন্তার বিষয় হল, ২০১৭ সালের পর থেকে টেস্ট ফরম্যাটে কোনো সেঞ্চুরি পাননি তিনি। ২০১৭ সালের মার্চে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। নিজেদের ওই শততম টেস্টটি জিতে স্মরণীয় রেখেছে বাংলাদেশ। আর সেটিই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়া এখন পর্যন্ত ২৫ টেস্টের মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র জয়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৯টি ম্যাচে পরাজিত এবং পাঁচটিতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাটিতে ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এরমধ্যে শ্রীলঙ্কার জয় ৮ বার এবং তিনটি ম্যাচ ড্র হয়। এর অর্থ, ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখনও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ২০২২ সালে ভারতের কাছে ২-০ ব্যবধানে হারের পর অবশ্য ২০২৩ সালে কোনো টেস্ট সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু আগের টেস্টের বাজে পারফরমেন্স দলের জয়ের ধারাকে এখন হুমকির মুখে ফেলেছে। তবে দলে সাকিবের অন্তর্ভুক্তি দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলাদেশকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে।
সাকিবের ফেরায় স্বাভাবিকভাবেই একাদশে পরিবর্তন আনতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্টে বাজে শট খেলে আউট হবার কারণে একাদশে জায়গা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে লিটনের। যদি লিটনকে বাদ দেওয়া হয় তাহলে উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় জাকির হাসান এবং ওপেনার হিসেবে সাদমান ইসলামকে দলে নেওয়া হতে পারে। সাধারণত ইনিংস শুরু করলেও, তখন জাকির পাঁচ বা ছয় নম্বরে খেলতে পারেন। ইনজুরির কারণে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যাওয়ায় পেসার কাসুন রাজিথাকে মিস করবে শ্রীলঙ্কা। তার জায়গায় দলে সুযোগ পেয়েছেন আরেক পেসার অসিথা ফার্নান্দো। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের মিশনে একাদশে পরিবর্তন আনতে হবে শ্রীলঙ্কাকেও।