আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ফিলিস্তিনের গাজার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দফা আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর অবরুদ্ধ ওই উপত্যকায় তাণ্ডব শুরু করে ইহুদিবাদী সেনারা। এতে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে বহু নার ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও অনেকে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ১৯ জানুয়ারি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় হামলা।কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা প্রতিবেদনে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়েছে, নতুন এই হামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তত ৩২৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু উত্তর গাজাতেই নিহতের সংখ্যা ১৫৪ জনে পৌঁছেছে।
হামলার কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দেয়। এতে বলা হয়, জিম্মিদের মুক্তির জন্য হামাসকে চাপ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। সে সময় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়। এছাড়া দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল।
অভিযানের নামে গাজায় রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে এমন কোনও স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ, আবাসিক ভবনসহ বেশির ভাগ স্থাপনাই ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৮ হাজার ৫৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১২ হাজার ৭০০ জন।
তবে গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, সেখানে ৬১ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে নিখোঁজ হওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আর বেঁচে নেই। এদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামাসের শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি প্রচারমাধ্যম কানের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযোগ হামাসের যোদ্ধারা পুনরায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।