আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম দিনেই বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারি করার ঘোষণা দিয়েছেন। আগের মেয়াদে প্রথম দিনে মাত্র একটি আদেশ জারি করেছিলেন তিনি, যা ওবামাকেয়ার নিয়ে ছিল। এবার তার পরিকল্পনা আরও বিস্তৃত।
ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্বাসন কার্যক্রম শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিউ ইয়র্কে এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনেই আমি সবচেয়ে বড় নির্বাসন কার্যক্রম শুরু করব। অপরাধীদের আমাদের দেশ থেকে বের করে দেব।’
তবে এই পরিকল্পনা অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তারা বলছেন, এটি বাস্তবায়ন করা কৌশলগতভাবে কঠিন এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে। ট্রাম্প জন্মসিদ্ধ নাগরিকত্বের নিয়ম বাতিল করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেককে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় ১৪তম সংশোধনীর অধীনে। ট্রাম্প এ নিয়ম প্রথম দিনেই বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও, বাইডেন প্রশাসনের উন্মুক্ত সীমান্ত নীতি বাতিল করার কথাও বলেছেন।
জানুয়ারির ৬ তারিখের দাঙ্গাবাজদের ক্ষমা
ট্রাম্প জানুয়ারির ৬ তারিখ ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় জড়িতদের ক্ষমা করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। ‘প্রথম দিনেই আমি এ বিষয়টি দেখব,’ তিনি বলেন। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, এটি আইনের শাসনকে দুর্বল করতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি
ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমি পুতিন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখি। তারা আমাকে সম্মান করে। কিন্তু বাইডেনকে তারা সম্মান করে না।’
অর্থনৈতিক ও জ্বালানি নীতি
ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার মতে, ‘ট্যারিফ শব্দটি হলো সবচেয়ে সুন্দর শব্দ।’ এছাড়াও, তিনি বাইডেনের বৈদ্যুতিক গাড়ির ম্যান্ডেট বাতিল এবং যুক্তরাষ্ট্রে তেল উত্তোলন বাড়ানোর কথা বলেছেন।
লিঙ্গ পরিচয় বিষয়ক নীতিমালা
ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, প্রথম দিনেই তিনি নারী খেলাধুলায় ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণ বন্ধ করবেন। এছাড়াও, লিঙ্গ পরিচয় সংশোধনমূলক যত্নের কার্যক্রম বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা নিয়ে এলজিবিটিকিউ+ সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
মেড ইন আমেরিকা উদ্যোগ
ট্রাম্প আমেরিকান অটো ইন্ডাস্ট্রিকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় তৈরি গাড়ি মানেই আমেরিকার ভবিষ্যৎ।’
ট্রাম্পের প্রথম দিনের পরিকল্পনাগুলো সাহসী এবং ব্যাপক। তবে বাস্তবায়নের দিক থেকে এগুলো কৌশলগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তার এই পরিকল্পনা শুধু তার প্রশাসনের দিকনির্দেশনা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণেও বড় ভূমিকা রাখবে।