Wednesday, June 11, 2025
Homeজাতীয়হয়রানি করতেই খালেদা জিয়াকে নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছে: আদালত

হয়রানি করতেই খালেদা জিয়াকে নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছে: আদালত

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালত বলেছেন, রাজনৈতিক কারণে এবং হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছে। একই ধরনের মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল তবে সেই মামলা চলেনি। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নাইকো দুর্নীতি মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত এ কথা বলেন। এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আটজনকে মামলায় খালাস দেন আদালত।

খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম।

এদিন বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে রায় ঘোষণা করতে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এ সময় বিচারক বলেন, প্রশ্ন হতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কীভাবে আসামির আত্মপক্ষ শুনানি করা হচ্ছে। ডিএলআরের ১৭ থেকে ২১ পর্যন্ত এ বিষয়ে বলা আছে। কোনো আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরায় থাকলে তার অনুপস্থিতিতে আত্মপক্ষ শুনানি করা যায়। আবার রায়ও দেওয়া যায়। সেই অনুযায়ী রায় দেওয়া হচ্ছে।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, একই ধরনের মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল। যেহেতু হাসিনার এ মামলা চলে নাই, তবুও খালেদা জিয়ার মামলার ফুল ট্রায়াল হয়েছে। আসামি সেলিম ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে তিনি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে অবশ্য তা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেখানেও বলেছেন তাকে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।

বিচারক আরও বলেন, মামলা তেজগাঁও থানার। কিন্তু তাকে রাখা হয় গুলশান থানায়। সেখানে নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষকে ডিনাই করছে। তাদের এটা জানাও নাই। রেকর্ডে দেখা গেছে, তাকে যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বহির্বিভাগের টিকিটও আছে। তাকে বাইরে থেকে ওষুধও কিনে দেওয়ার রশিদও রয়েছে।

তিনি বলেন, সেলিম ভূঁইয়াকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে ফোর্সগুলো ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সে কারণে এই ১৬৪ ধারার জবানবন্দিকে সত্য বলার সুযোগ নাই। এর উদ্দেশ্য হলো গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, কাশেম শরীফসহ অন্যদের জড়িত করার জন্য কিন্তু জোরপূর্বক এ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এবং হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িত করা হয়েছে। পরে আদালত তাদের খালাসের রায় দেন।

মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দেন। জামিনে থাকা অপর আসামিরা আদালতে হাজির হন। এদিকে সব আসামি খালাস পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। রায়কে ঐতিহাসিক ও দৃষ্টান্তমূলক বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments