Wednesday, March 12, 2025
Homeঅপরাধসাভারে সাংবাদিকে ওপর সন্ত্রাসী হামলার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে থানায় মামলা

সাভারে সাংবাদিকে ওপর সন্ত্রাসী হামলার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে থানায় মামলা

আলোর যুগ প্রতিবেদন

সাভারে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন স্থানীয় জিটিভির সাংবাদিক শামীম হাসান সীমান্ত (৩০)সহ দুই জন। প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দীর্ঘ দুই ঘন্টা একটি টর্চার সেলে আটকে রেখে তাদের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের ভর্তি করা হয়েছে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।

এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।গত বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরী গেইটের বিপরীতে এই ঘটনা ঘটে। এ ব্যপারে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘটনার সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে। ফুটেজে সাংবাদিক শামীম হাসান সীমান্ত ও তার সহকারীর ওপর হামলার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় আশুলিয়া থানায় আহত সাংবাদিকের অভিযোগ এর ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়।

আহত সাংবাদিক শামীম হাসান সীমান্ত রাজবাড়ী জেলার কালুখালী থানার সিকজান গ্রামের দুলাল মন্ডলের ছেলে।
তিনি জানান, পেশাগত তথ্য সংগ্রহের জন্যে আমি ও সহকর্মি আমিনুল ইসলাম জাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশের আগেই আরিচা মহাসড়কে সন্ত্রাসী সোহেল রানা (৪২) ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ওপর চড়াও হয়।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই সোহেল রানার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী সিদ্দিক (৪৫) আল মামুন খান (৪৮) ফয়জুল ইসলাম (৪০),ইমদাদুল হক (৪০), ও জাহাঙ্গীর হোসেন সাগর (৪২) আমাদের প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যায় ডেইরী গেইটের বিপরীতে ক্যম্পাসের ভিতর সহযোগী সিদ্দিকের একটি টর্চার সেলে।
সেখানে প্রায় দুই ঘন্টা আটকে রেখে সবাই মিলে আমাদের ওপর লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এক পর্যায়ে প্রচন্ড আঘাতে আমাদের আর্ত চিকিৎকার শুনে আশেপাশের দোকানদাররা এগিয়ে আসে। তারা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।পরদিন হাসপাতালে থেকেই আমরা থানায় অভিযোগ দেই। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে মলাটি (নং-১৮) গ্রহণ করে।দায়ের হওয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিক।তিনি জানান, আমরা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে
বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে মামলাটি নতিভুক্ত করেছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানান,আমার কার্যালয়ের সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তিনি জানান,পুলিশের চাহিদার আলোকে আমরা ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহ করেছি।পাশাপাশি আহত সাংবাদিকের বর্ননা মতে দেয়া সিদ্দিকের টর্চার সেলের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্টার (এস্টেট)জানান,আমরা অভিযোগ পেয়ে বিষয় টি পুলিশকে জানিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও নিরাপত্তা প্রধান জেফরুল হাসান সজল জানান,ক্যাম্পাসের সামনে একজন সাংবাদিককে তুলে মারধরের ঘটনাটি কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তিনি জানান,ক্যাম্পাস ঘিরে কোন সন্ত্রাসীর নেটওয়ার্ক চলতে দেয়া যাবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাই জানান, ছেলের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মাদকে সংশ্লিষ্টটার কারনে বিব্রত সোহেল রানার পরিবার।
তার বাবা আব্দুল মান্নানন জানান,দেড় বছর আগে ওর মা সালেহা বেগম ওকে ফেলে অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে চলে যায়। তারপর থেকেই মামাদের ছত্রছায়ায় বখাটে হিসেবেই বেড়ে ওঠেন সোহেল রানা। ভালোবেসে বিয়ে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মালীর মেয়েকে। এক পর্যায়ে মাদকে জড়িয়ে গেলে সেই স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে যান। আয় রোজগার বলতে দৃশ্যমান কোন উৎস নেই। মাদকের টাকার জন্যে আমার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকলে দীর্ঘদিন আগে আমি তাকে ত্যাজ্য বলে ঘোষণা দিই।
জিটিভির সাংবাদিক শামীম হাসান সীমান্ত জানান,সোহেল রানা এর আগেও বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন জায়েদ আনসারীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ বিষয়েও সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডাইরী করা হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments