Saturday, November 23, 2024
Homeদেশজুড়েশিক্ষার্থীদের হাতে সুশৃঙ্খল রাস্তা

শিক্ষার্থীদের হাতে সুশৃঙ্খল রাস্তা

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোর মোড়ে মোড়ে প্রাইভেট কার, বাস, রিকশাসহ অন্য যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলছে। লাইন মেনে, কোনো ওভারটেকিং ছাড়াই চালকরা গাড়ি চালাচ্ছেন। সড়কে নেই যানজট। বাস চালকরা আগের মতো যেখানে সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলছেন না। মোটরসাইকেল চালকরাও হেলমেট পরে ট্রাফিক নিয়ম মেনে সড়কে চলাচল করছেন। অপ্রয়োজনে কেউ আগের মতো হর্ন বাজাচ্ছেন না। এমন সুশৃঙ্খলভাবে নগরবাসীকে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলাচল করতে আগে দেখা যায়নি। অথচ ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে এখন ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাদের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই ঢাকায় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে। আর তাদের সহযোগিতা করছে নগরবাসীও।

তবে এই দৃশ্য শুধু ঢাকার না, ঢাকার বাইরের বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে জেলা শহরগুলোতেও সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরব থাকতে দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এ কাজের প্রশংসা করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। গতকাল মিরপুর-১২ নম্বর এলাকায় ১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দলকে দেখা যায় সড়কের যান নিয়ন্ত্রণ করতে। সড়কের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে লাঠি হাতে তারা গাড়ি চালকদের লেন মেনে যান চালানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিল।

তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে শিক্ষার্থীদের একজন মো. মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে সড়কে যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের সঙ্গে স্কাউটের শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন শুরু না করবে ততদিন পর্যন্ত আমরা এই দায়িত্ব পালন করব।’ এই শিক্ষার্থী আরও জানায়, তারা রাত ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের কাজ করবে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন’ ‘হেলমেট ব্যবহার করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

শুধু যান চলাচল নিয়ন্ত্রণই নয়, এর পাশাপাশি সড়ক পরিষ্কারেও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। মিরপুর ১২ নম্বরে, রাস্তার পাশের ড্রেনে জমে থাকা ময়লাও তারা পরিষ্কার করছিলেন। আর শিক্ষার্থীদের এই কাজের প্রশংসা করেন সাধারণ মানুষ। আশপাশের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট থেকে শিক্ষার্থীদের কাজের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের খাবার, পানি এবং জুস দেওয়া হয়।

কালশী সড়কে গতকাল মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝাড়ু ও বেলচা হাতে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে দেখা যায়। তাদের একজন মারিয়া তাবাসসুম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সড়কে যান চলাচলের পাশাপাশি আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সড়কের ওপর পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করছি। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে সড়কে চলাচল করতে পারেন।’ কালশী এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, ‘যে শিক্ষার্থীরা কয়দিন আগে আন্দোলন করে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারকে গদি থেকে নামিয়েছে, আজ সেই সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। রাস্তাঘাট পরিষ্কার করছে।

আমি তাদের এই কাজের প্রশংসা করর্ছি।’ মিরপুর ইসিবি চত্বর মোড়েও শিক্ষার্থীদের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে বেশ সক্রিয় দেখা যায়। সড়কে যেসব আরোহী হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা তাদের হেলমেট পরার জন্য বলছিলেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যারা হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন তাদের আমরা হেলমেট পরার আহ্বান জানাচ্ছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যাত্রীরা আমাদের সহযোগিতা করছেন। কেউ প্রশংসা করছেন। অনেকে আমাদের জন্য খাবার পানি, বিস্কুট দিয়ে যাচ্ছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments