আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেস। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস মেডিকেল এক্সামিনার কাউন্টি বলছে, মৃতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শনাক্তকরণে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। কারণ, দাবানল পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তার উদ্বেগের কারণে মেডিকেল পরীক্ষক বিভাগ যথাযথভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না।’ ভুক্তভোগীদের স্বজনদের তথ্য জানানোর প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
দাবানলে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, আরও ২ লাখ মানুষকে সতর্কতার আওতায় রাখা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের শেরিফ রবার্ট লুনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। দাবানলের কারণে শুধু ইটন এলাকাতেই চার–পাঁচ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। কর্মকর্তাদের বরাতে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যালিসেইডসের দাবানলে আরও ৫ হাজার ৩০০ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্টনি ম্যারন বলেছেন, দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসার পর মানুষের দেহাবশেষ শনাক্তকারী দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাবে। বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা একিউওয়েদারের হিসাব অনুসারে, দাবানলে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার থেকে ১৫ হাজার কোটি ডলারের মতো আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ছয়টি অঙ্গরাজ্যের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নিয়ন্ত্রণের কাজে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানল নিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক দলীয় গভর্নরের সাথে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। ট্রাম্প পানি সঙ্কটের জন্য ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আলাদা ছয়টি দাবানলের মধ্যে অনেকগুলোই নিয়ন্ত্রণের পুরোপুরি বাইরে চলে গেছে। হারিকেন তীব্রতার বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির চাপ কম থাকায় আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল কর্মীরা।
আগুনের তীব্রতা দেখে তা নিয়ন্ত্রণ করার বদলে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার কাজ করছেন ফায়ার ফাইটাররা। ভয়াবহ দাবানল মোকাবিলার অভিজ্ঞতা আছে কানাডার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল মোকাবিলার সক্ষমতাসম্পন্ন উড়োজাহাজ পাঠিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, কানাডার ফায়ার সার্ভিসের ২৫০ জন কর্মীকে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।