আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি এমন সময় দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন যখন সমর্থকদের প্রতিরোধের মুখে দেশটির অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে গ্রেফতার করা যায়নি। এতে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং ফ্রান্স সফরে যাবেন। তিনি আগামীকাল রবিবার সফর শুরু করবেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এটাই তার শেষ বিদেশ সফর।
দক্ষিণ কোরিয়া ওয়াশিংটনের অন্যতম প্রধান নিরাপত্তা মিত্র। তবে দেশটিতে গত ৩ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সামরিক আইন জারির কারণে দেশে মারাত্মক রানৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। সিউলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ব্লিঙ্কেন দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো তাই-ইউলের সঙ্গে আগামী সোমবার বৈঠক করবেন।
মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন জোট, দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন-জাপান সহযোগিতা, উত্তর কোরিয়ার সমস্যা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে সরাসরি কোনো কিছু উল্লেখ করেনি। তবে কিভাবে আমাদের দুই দেশের অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা গড়ে তোলা যায় ব্লিঙ্কেন সে সম্পর্কে কথা বলবেন।
তদন্তকারীরা শুক্রবার ইউনের সামরিক আইন ঘোষণার কারণে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা কার্যকর করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তারক্ষীদের বাধার কারণে ব্যর্থ হয়। এই গ্রেফতারী পরোয়ানার মেয়াদ আগামী ৬ জানুয়ারি শেষ হবে। ওই একই দিনে চো-এর সঙ্গে ব্লিঙ্কেন সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেছেন। গত মাসে ওয়াশিংটন বলেছিল, তারা ইউনের সামরিক আইন জারির পর গণতন্ত্র রক্ষা করতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কথা বলবে। ইউন সামরিক আইন জারি করায় তদন্তকারীরা শুক্রবার তাকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা কার্যকর করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তারক্ষীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্র শক্তিশালী এবং মজবুত করতে আমরা সকলের সাথে আলেচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সমকক্ষদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে জড়িত থাকব। যাতে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার গুরুত্ব আরও জোরদার হয়। ইউন দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখনো বহাল রয়েছেন, কিন্তু তার অভিশংসনের বিষয়ে সাংবিধানিক আদালতের সিদ্ধান্তের কারণে তার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মাত্র এক সপ্তাহ হল অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মোক দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পর ব্লিঙ্কেন এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরেক মিত্র, জাপান যাবেন। যেখানে তিনি বিগত কয়েক বছরে মার্কিন-জাপান জোটের অসাধারণ অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন।