আলোর যুগ স্পোর্টসঃ প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার আগমুহূর্তে গোল করে ইন্টার মায়ামি সিএফ-এর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল অবদানের রেকর্ড গড়লেন লিওনেল মেসি। তবে তার এই অর্জনেও জয় ধরা দেয়নি। টরেন্টো এফসির বিপক্ষে রবিবার রাতে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে হেরনসদের। এই ড্রয়ে শীর্ষস্থান থেকে এক ধাপ নেমে গেছে মায়ামি, ম্যাচ যদিও একটি কম খেলেছে তারা। তবে এই ফলাফল তাদের জন্যই বেশি হতাশার। অনেক দিন পর প্রথম পছন্দের পুরো দলকে একসঙ্গে শুরুর একাদশে নামাতে পেরেছিলেন কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো। গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডার ফেরেন চোট কাটিয়ে। সঙ্গে মেসি, জর্দি আলবা, সের্হিও বুসকেতস, লুইস সুয়ারেসরা সবাই ছিলেন। ঘরের মাঠে এমন দল নিয়েও তারা জিততে পারেনি পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা টরেন্টার সঙ্গে।
ম্যাচের শুরু থেকেই বেশ আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। চতুর্থ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আলবার দুর্দান্ত ভলি ঠেকিয়ে দেন টরেন্টার গোলকিপার। ষষ্ঠদশ মিনিটে টরন্টোর ফরোয়ার্ড থিও কর্বেনুর শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। দুই মিনিট পরই ফেদেরিকো বের্নারদেস্কির দারুণ পাস থেকে লরেন্সো ইনসিনিয়ের শট কোনোরকমে ঠেকান মায়ামির গোলকিপার ক্যালেন্ডার। তবে বল তখনও বিপদমুক্ত হয়নি। বের্নারদেস্কির শট ফিরে আসে মায়ামির একজনের পায়ে লেগে। ফিরতি বলে কর্বেনুর শট আবার ফিরে আগে পোস্টে লেগে। ২৪তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে একজনকে দারুণভাবে কাটিয়ে বিপজ্জনকভাবে বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। কিন্তু কাছ থেকে নেওয়া তার শট কোনোরকমে ঠেকিয়ে দেন টরন্টোর গোলকিপার। ২৯তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে তেলাস্কোর সেগোভিয়ার মাপা গড়ানো শট আশ্রয় নেয় জালে। কিন্তু সুয়ারেস অফ সাইডে থাকায় গোল পায়নি মায়ামি।
মিনিট দশেক পর দারুণভাবে শরীর ঘুরিয়ে সঙ্গে থাকা ডিফেন্ডারকে ছিটকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন মেসি। কিন্তু ভিএআর পরীক্ষায় দেখা যায়, আক্রমণের শুরুতে ফাউল করেছিলেন মেসিই। ৪৪তম মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক অল্পের জন্য ওপর দিয়ে চলে যায়। ৪৫ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে টরন্টোকে এগিয়ে নেন বের্নারদেস্কি। ইনসিনিয়ের পাস বক্সের ভেতর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মায়ামির দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে কাটিয়ে আলতো টোকায় গোল করেন ইতালিয়ান উইঙ্গার।
এবারের লিগে সাত ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয়বার আগে গোল করতে পারল টরেন্টো। মায়ামি ম্যাচে ফিরতে সময় নেননি খুব একটা। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বক্সের ঠিক মাথায় সেগোভিয়ার পাস ডান পায়ে ঠেকিয়ে বাঁ পায়ের ভলিতে মেসি সমতায় ফেরান দলকে। বলের নাগাল পাননি টরন্টোর গোলকিপার। লিগের চলতি মৌসুমে মেসির তৃতীয় গোল এটি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোল হলো ছয়টি। মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর তার মোট গোল হলো ৪০টি। গোলের রেকর্ড তিনি গড়েছেন আগেই। এখন শুধু নিজের অর্জনই সমৃদ্ধ করছেন আরও।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অল্পের জন্য আবার গোল পাননি বের্নারদেস্কি। ৫৩তম মিনিটে ফাঁকা পোস্টে বল জালে পাঠাতে পারেননি সুয়ারেস। এরপরও কিছু সুযোগ আদায় করে দুই দল, মায়ামিই ছিল সেখানে এগিয়ে। কিন্তু ম্যাচে কেউ কাউকে ছাড়াতে পারেনি। ম্যাচের ৬৭ শতাংশ সময় বল ছিল মায়ামির নিয়ন্ত্রণে। গোলে ২৩টি শট নেয় তার, এর নয়টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু ওই একটির বেশি গোল আর করতে পারেনি। ছয় ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্সে এখন দুই নম্বরে মেসিরা। সাত ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কলম্বাস ক্রু। সাত ম্যাচে কোনো জয় নেই টরন্টোর। তিন পয়েন্ট নিয়ে তলানি থেকে দুইয়ে আছে তারা।