আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ফিলিস্তিন, ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনার মাধ্যমে শেষ হয়েছে বরিশালের চরমোনাই দরবার শরীফের অগ্রহায়নের তিন দিনব্যাপি মাহফিল। শনিবার সকাল আটটায় আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিলের সমাপ্তি হয়। আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
আখেরী বয়ানে চরমোনাই পীর বলেন, মানুষ আজ আল্লাহকে ভুলে নাফরমানি করছে অহরহ। অথচ একজন মানুষ কবরে গিয়ে মাফ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিকৃষ্ট পশুর মত মনে করতে হবে। সুতরাং তাক্বওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই ঐ মানুষ এমনকি আলেম, মুফতি ও পীরের কোন মূল্য নেই।
তিনি বলেন, নিজেকে নিজে ছোট মনে করতে হবে। আমিত্ব ভাব ও তাকাব্বুরী পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা বিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের মাধ্যমে ক্বলব পরিশুদ্ধ করতে হবে। গীবতের মতো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। পরিবারের সবাইকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনের পাবন্দি করতে হবে। পরিবারে খাছ পর্দা জারি করতে হবে। সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য হতে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহ ওয়ালাদের কিতাব পড়তে হবে। সাপ্তাহিক হালকায়ে জিকির ও তালীমে নিয়মিত অংশ নিতে হবে। ছহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে।
আখেরী মুনাজাতে অংশ নেয়া প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মোবারকবাদ জানান তিনি।
আখেরী বয়ানের পর চরমোনাই পীর বিভিন্ন লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন। এসময় তিনি মুরিদানদের সঠিক পথে পরিচালিত হবার বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। অতঃপর তিনি তাওবা করিয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার শপথ করান।
তিন দিনের মাহফিলে অংশ নিতে এসে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে খুলনা নিবাসী মো. আলতাফ হোসেন (৬৫) ও ঢাকা নিবাসী রফিকুল ইসলাম (৬৩) মৃত্যুবরণ করেন। উভয়ের জানাজা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এছাড়াও ৪ জন অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।