আলোর যুগ স্পোর্টসঃ দেশের ক্রিকেটারদের জন্য ১০ দফা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। কোথাও খেলতে গেলে এই নিষেধাজ্ঞাগুলি মানতে হবে রোহিত শর্মা-কোহলিদের। এই নিয়ম চালু হলে অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে তাদের। দেশটির গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, শিগগির এসব সিদ্ধান্ত মানাতে বাধ্য করা হবে। তা হোক সিনিয়র কিংবা জুনিয়র, নিষেধাজ্ঞায় কড়া নজর বিসিসিআইয়ের। কোনো ক্রিকেটার এই ১০ নিয়ম ভঙ্গ করলে, তাকে তিরস্কারের পাশাপাশি শাস্তিও ভোগ করতে হতে পারে।
নতুন নিয়মগুলি আনার নেপথ্যে বোর্ডের কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা চায় ক্রিকেটারেরা খেলার প্রতি আরও মনোযোগী হয়ে উঠুক। সেই সঙ্গে দলে একাগ্রতা, শৃঙ্খলা এবং ইতিবাচক মনোভাব চাইছে বোর্ড। ক্রিকেটারদের আরও পেশাদার করাই লক্ষ্য তাদের। অধিনায়ক রোহিত শর্মা, কোচ গৌতম গম্ভীর, প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার ও বিসিসিআই সভাপতি রজার বিন্নীর মধ্যে বৈঠকে ১০ দফা আচরণবিধি তৈরি হয়েছে। ‘ইন্ডিয়া টুডে’ বোর্ডের এই নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে—
পরিবারের সঙ্গে যাতায়াত করতে হলে এখন থেকে বোর্ডকে জানাতে হবে। অতি প্রয়োজন না হলে দলের সঙ্গেই ক্রিকেটারদের যাতায়াত করতে হবে। জাতীয় দলে ফুরসত পেলে অবশ্যই ওই ক্রিকেটারকে ঘরোয়া টুর্নামেন্ট খেলতে হবে। তা হোক সিনিয়র বা জুনিয়র। সবার ক্ষেত্রে আসবে এক নিয়ম। ৩০ দিনের বেশি সফরে কোহলিরা সর্বোচ্চ পাঁচটি ব্যাগ নিতে পারবেন। এই পাঁচটি ব্যাগের মোট ওজন ১৫০ কেজির বেশি হলে চলবে না। তার মধ্যে দু’টির বেশি খেলার সরঞ্জামের কিট ব্যাগ থাকতে পারবে না।
এখন থেকে ক্রিকেটারেরা নিজেদের ম্যানেজার, সহকারী, নিরাপত্তারক্ষী, রান্নার লোক নিয়ে যেতে পারবেন না। বিশেষ ক্ষেত্রে নিলেও, তার অনুমোদন লাগবে। কোনও বাড়তি সরঞ্জাম বা ব্যক্তিগত কোনও জিনিস নিতে হলে বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্স থেকে অনুমতি নিতে হবে। তবে বাড়তি জিনিসের জন্য বাড়তি খরচ বোর্ড নেবে না, ক্রিকেটারদের নিতে হবে। একাকি অনুশীলন করতে চাইলে কাউকে বাধা দেবে না বিসিসিআই। তবে দলের নির্ধারিত অনুশীলনে আসা বাধ্যতামূলক। অনুশীলনে দলের সঙ্গে যেতে হবে এবং ফিরতেও হবে।
সফরের মাঝে বা সিরিজের মাঝে বিজ্ঞাপনের কাজ করা নিয়ে ক্রিকেটারদের কড়া বার্তা দেবে ভারতের বোর্ড। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিভিন্ন শ্যুট এবং বিজ্ঞাপনের কাজে ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। বোর্ডের অনুষ্ঠানেও উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। দল কাউকে বাড়তি সুযোগ দেবে না। ম্যাচ আগে শেষ হয়ে গেলেও ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। যত দিন না সফর শেষ হচ্ছে। তবে বিশেষ কারণ দেখাতে পারলে মিলবে ছুটি।
সবচেয়ে জরুরি হিসেবে বোর্ড দেখছে ক্রিকেট সফরে পরিবারকে নেওয়া। এখন থেকে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ অর্থাৎ ১৪ দিন কোনো খেলোয়াড় তার পরিবার সঙ্গে রাখতে পারবেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হার, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে নাকানি চুবানি এবং সবশেষ অস্ট্রেলিয়ায় ভূপাতিত—সব মিলিয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি তো গেছেই, সঙ্গে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালও হাতছাড়া হয়েছে ভারতের। এসব চলার মাঝেই বের হচ্ছিল ড্রেসিংরুমের খবর। সব মিলিয়ে ক্রিকেটারদের কিছু আচরণে তিতিবিরক্ত দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।