আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে বামপন্থী জোটের জয়ের খবরে প্যারিসের উত্তরের শহরতলিতে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, একটি ক্লাবে তরুণ-তরুণীরা আনন্দ উদযাপন করেন। কেউ কেউ আনন্দে কেঁদেও ফেলেন।
সেখানে উপস্থিত ১৯ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সারাহ বেনানি গভীর আগ্রহে ক্লাবের টেলিভিশনের পর্দার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। টেলিভিশনে বামপন্থী জোটের জয়ী হওয়ার খবর ঘোষণার পরপরই তিনি বলেন, আমার খুব নিশ্চিন্ত লাগছে। তার চোখে আনন্দের ঝিলিক ছিল। সারাহ আরও বলেন, ‘আজ রাতে আমি যখন বাড়ি ফিরব, আমাকে এই আতঙ্কে থাকতে হবে না যে কেউ আমার হিজাব টেনে খুলে নিতে পারে।’
ফ্রান্সের প্রথম দফা ভোটে উগ্র ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) এগিয়ে ছিল। দ্বিতীয় দফা ভোটেও যদি দলটি জয়ী হতো এবং সরকার গঠন করতো, তাহলে বর্ণবাদ উসকানি পেত এবং ফ্রান্সজুড়ে বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফা ভোটে ন্যাশনাল র্যালি তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে এবং তাদের ঠেকিয়ে দিয়েছে বামপন্থী জোট। রবিবার ঘোষণা করা আনুষ্ঠানিক ফলে দেখা গেছে, বামপন্থী জোটের নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে। প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোনের মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল দ্বিতীয় স্থানে এসেছে।
ফলাফল ঘোষণার পর সারাহ বেনানির পাশের অনেক তরুণী একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। নাচতে থাকেন এবং চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘এটা (ফ্রান্স) আমাদের বাড়ি।’ এদিকে, ২১ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেলিম ক্রুচি বলেন, গত সপ্তাহে আমাদের খুবই মন খারাপ ছিল। সেখানে আশার কিছুই ছিল না। কিন্তু এখন আমরা খুবই খুশি, যদিও লড়াই চলবে। আইন নিয়ে লেখাপড়া করা ২২ বছর বয়সী মারিয়াম তোরে বলেন, আমি কাঁদতে চেয়েছিলাম। আমি সাবওয়েতে ছিলাম। আমার বোন আমাকে ফোন করে বলে, আমরা জিতে গেছি! আমি মেট্রোর ভেতরই চিৎকার করে উঠি। এই জয়ে ফ্রান্সের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে এবং তারা দেশকে আরও সুষ্ঠু ও সমানাধিকারের সমাজ হিসেবে দেখতে চায়।