আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত শনিবার। এদিন ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে এই শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন। তাদের সঙ্গে পোপকে শেষ বিদায় জানাতে উপস্থিত হবেন বিশ্বনেতা ও বিভিন্ন দেশের রাজপরিবারের সদস্যরাও।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্টার সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে স্ট্রোক ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান পোপ ফ্রান্সিস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ইস্টার সানডে উপলক্ষে হাজার হাজার ইস্টার উপাসকদের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের বারান্দা থেকে হাত নেড়ে অভ্যর্থনা জানান পোপ। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। তারা পোপের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, পোপের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকবেন বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ওয়েলসের প্রিন্স (প্রিন্স উইলিয়াম), ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলি, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ভন ডার লিয়েন। এদিকে পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাতে ফুল ও মোমবাতি নিয়ে ভ্যাটিকান সিটিতে ভিড় করছেন হাজার হাজার শোকাহত ভক্ত। মঙ্গলবার পোপের জীবনের শেষ ২৪ ঘণ্টার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকান।
সম্প্রতি পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে অতিবাহিত করেন পোপ ফ্রান্সিস। ফলে রবিবার ভক্তদের অভ্যর্থনা জানাতে বারান্দায় আসতে কিছুটা শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। পোপ তার ব্যক্তিগত নার্স ম্যাসিমিলিয়ানো স্ট্রাপেত্তিকে জিজ্ঞাসা করেন- আপনার কি মনে হয় আমি এটা করতে পারব? ম্যাসিমিলিয়ানো তাকে আশ্বস্ত করার পর তিনি বারান্দায় আসেন এবং সেখানে জড়ো হওয়া জনতাকে আশীর্বাদ করেন।
ওই দিন স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি অসুস্থ বোধ করেন। এর এক ঘণ্টা পর তিনি ম্যাসিমিলিয়ানোর দিকে হাত নাড়ান এবং এরপর কোমায় চলে যান। এরপর সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে পরলোকগমন করেন। তার পাশে উপস্থিত ব্যক্তিরা বলেন, তিনি কষ্ট পাননি। বুধবার সকালে পোপের মৃতদেহ কার্ডিনালের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রার মাধ্যমে কাসা সান্তা মার্তার চ্যাপেল থেকে সেন্ট পিটার্সের ব্যাসিলিকাতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে শুক্রবার পর্যন্ত তার মৃতদেহ একটি খোলা কফিনে রাখা হবে। যাতে শোকসন্তপ্ত ভক্ত ও অনুরাগীরা শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।
শোভাযাত্রার ঠিক আগে ক্যামেরলেঙ্গোর নেতৃত্বে এক মুহূর্ত প্রার্থনা করা হবে। সাধারণ জনগণ বুধবার সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সেন্ট পিটার্সের ব্যাসিলিকা পরিদর্শন করতে পারবেন। বৃহস্পতিবার পরিদর্শন চলবে সকাল ৭টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। শুক্রবারও সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। একটি সমাপনী প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পোপকে ঈশ্বরের কাছে অর্পণ করা হবে। এরপর শুরু হবে ৯ দিনের শোককাল। যা নভেমডিয়ালস নামে পরিচিত। শনিবার প্রচুর জনসমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় আড়াই লাখ মানুষের উপস্থিতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।