আলোর যুগ স্পোর্টসঃ আগের ২০ ম্যাচে যাদের জয় ছিল মাত্র একটি, গোল হজম করেছিল ৪৪টি, সেই সাউথ্যাম্পটনের দেয়াল ভাঙতে ঘাম ছুটে গেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। তবে অনেক কষ্টে হলেও শেষটা হলো তাদের দুর্দান্ত। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে আমাদ দিয়ালোর হ্যাটট্রিকে দারুণ জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসল হুবেন আমুরির দল। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে ইউনাইটেড। আত্মঘাতী গোলে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েছিল তারা। এরপর শেষ দিকে ১২ মিনিটে তিন গোল করে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান দিয়ালো।
গত সেপ্টেম্বরে লিগে প্রথম দেখায় সাউথ্যাম্পটনের মাঠে ৩-০ গোলে জিতেছিল ইউনাইটেড। এবার হারের শঙ্কায় পড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই জিতল দলটি। ব্যর্থতায় ভরা মৌসুমে এবারের লিগে মাত্র সপ্তম জয় পেল ইউনাইটেড। সেই সঙ্গে পাঁচ ড্রয়ে ২১ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে উঠেছে তারা। ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে সাউথ্যাম্পটন।
অধারাবাহিক পথচলায় লিগে টানা তিন হারের পর বছরে প্রথমবার মাঠে নেমে শক্তিশালী লিভারপুলের মাঠে গিয়ে ১-১ ড্র করে ইউনাইটেড। এরপর গত রোববার আর্সেনালের বিপক্ষে লড়াইয়ে কোণঠাসা থেকেও চমৎকার এক সাফল্য পায় তারা; এক জন কম নিয়ে অনেকটা সময় প্রতিপক্ষকে আটকে রেখে টাইব্রেকারে জিতে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে ওঠে আমুরির দল।
ওই জয়ে আত্মবিশ্বাসী ইউনাইটেড এদিন ২০তম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। রাসমুস হয়লুনের পাস বক্সে দারুণ পজিশনে পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন গার্নাচো। তার ওই মিস দেখে ডাগআউটে মাথায় হাত উঠে যায় আমুরির, হতাশায় পোস্টে লাথি মারেন হয়লুন। সাত মিনিট পর উল্টো এগিয়ে যেতে পারতো সাউথ্যাম্পটন; তবে আন্দ্রে ওনানা ডাবল সেভে তা হতে দেননি। তরুণ মিডফিল্ডার টাইলার ডিবলিংয়ে শট ঝাঁপিয়ে আটকানোর পর, ফিরতি বলে মাথেউস ফের্নান্দেসের শটও অসাধারণ ক্ষীপ্রতায় রুখে দেন ক্যামেরুনের গোলরক্ষক।
দুর্ভাগ্যবশত ৪৩তম মিনিটে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল গোলমুখে ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার মানুয়েল উগার্তের পিঠে লেগে জালে জড়ায়। প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১০টি শট নিয়ে একটিমাত্র লক্ষ্যে রাখতে পারা ইউনাইটেডের ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় পরের মিনিটে আরও বড় ধাক্কা লাগতে পারতো। তবে ডিবলিংয়ের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ওনানা।
৫৮তম মিনিটে একটুর জন্য দ্বিতীয় গোল পায়নি সাউথ্যাম্পটন। ঘানার মিডফিল্ডার কামালদিন সুলেমানার দুরূহ কোণ থেকে শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোলমুখে ফাঁকায় বল পেয়ে প্রয়োজনীয় টোকা দিতে পারেননি আন্তোনি। ম্যাচের আধা ঘন্টা বাকি থাকতে মরিয়া হয়ে ওঠে ইউনাইটেড। আক্রমণের ঝড় তুলে ৮২তম মিনিটে অবশেষে জালের দেখা পায় তারা। সতীর্থের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে একজনের বাধা এড়িয়ে গোলটি করেন দিয়ালো।
সমতায় ফিরে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে ইউনাইটেড। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় তারা। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে গোলটি করেন দিয়ালো। তিন মিনিট পর ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের একজনের থেকে বল কেড়ে নিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণের পাশাপাশি সব অনিশ্চয়তার ইতি টেনে দেন কোত দি ভোয়ার এই ফরোয়ার্ড।