আলোর যুগ স্পোর্টসঃ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো জস বাটলার পারলেন না কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে। তার দারুণ ইনিংসটির সঙ্গে বাকিদের টুকটাক অবদানে লড়ার মতো সংগ্রহ পেল ইংল্যান্ড। পরে বল হাতে আলো ছড়ালেন লম্বা সময় পর দলে ফেরা জফ্রা আর্চার। সঙ্গে মইন আলির দুত্যিময় বোলিংয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংলিশরা।
শনিবার (২৫ মে) বার্মিংহ্যামে সিরিজে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের জয় ২৩ রানে। ১৮৩ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে ১৬০ রানে গুটিয়ে দিল তারা। চার ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। ইংলিশদের জয়ের নায়ক বাটলার ৩ ছক্কা ও ৮ চারে ৫১ বলে করেন ৮৪ রান। দুই দলের আর কেউ পাননি ফিফটির ছোঁয়া। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন ফাখার জামান। পিঠ ও কনুইয়ের চোট কাটিয়ে এক বছরেরও বেশি সময় পর ইংল্যান্ডের জার্সিতে খেলতে নেমে ২৮ রানে ২ উইকেট নেন আর্চার। অফ স্পিনে মইনের শিকার ২৬ রানে দুটি। ৩ উইকেট নিয়ে ইংলিশদের সফলতম পেসার রিস টপলি দেন ৪১ রান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ড চতুর্থ ওভারে হারায় আইপিএলে দারুণ খেলা ফিল সল্টকে। শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় তারা উইল জ্যাকস ও বাটলারের জুটিতে। তাদের ৪২ বল স্থায়ী ৭১ রানের জুটি ভাঙে জ্যাকসের বিদায়ে। ২ ছক্কা ও ৪টি চারে ২৩ বলে ৩৭ রান করেন তিনি। এক ওভার পর হারিস রউফকে স্কুপ করে ছক্কায় উড়িয়ে ৩৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন বাটলার। ইংলিশ অধিনায়ক ও জনি বেয়ারস্টোর জুটিও জমে ওঠে। তাদের ৪৮ রানের যুগলে ফাটল ধরান শাহিন শাহ আফ্রিদি। এই পেসারকে ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন বেয়ারস্টো। সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকা বাটলারকে হতাশায় ডোবান রউফ। লং-অনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ইংলিশ ওপেনারের ইনিংস। শেষ দিকে একটি করে ছক্কা-চারে ৪ বলে ১২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন আর্চার।
রান তাড়ায় ১৪ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। ইনিংসের তৃতীয় বলে মইনকে ডাউন দা উইকেটে খেলে মিডউইকেটে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। চতুর্থ ওভারে টপলির শিকার সাইম আইয়ুব। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর চাপ দলের ওপর পড়তে দেননি ফাখার জামান। মুখোমুখি প্রথম চার বলেই বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। তার বিধ্বংসী ব্যাটিং চলতে থাকে পরেও। ফাখারকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে রানের চাকায় দম দেন বাবর আজম। ২১ বলেই পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে তাদের জুটি।
কিছুক্ষণ পর বাবরকে এলবিডব্লিউ করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা ৫৩ রানের জুটি ভেঙে দেন মইন। ৪টি চারে ৩২ রান করেন পাকিস্তান অধিনায়ক। শাদাব খানকে টিকতে দেননি আদিল রাশিদ। নিজের প্রথম ওভারে ১৫ রান দেওয়া আর্চার পরের ওভারে ঘুরে দাঁড়ান। এক রান দিয়ে আজম খানকে (২ চারে ১১) ফেরান গতিময় এই পেসার। ফিফটির দুয়ারে এসে বিদায় নেন বিধ্বংসী ফাখার, করেন ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ২১ বলে ৪৫ রান। ইফতিখার আহমেদ ও ইমাদ ওয়াসিম চেষ্টা চালান কিছুক্ষণ। টপলির বলে ইফতিখার বিদায় নেওয়ার এক ওভার পর আর্চার ফিরিয়ে দেন ইমাদকে। এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনি পাকিস্তান। কার্ডিফে দুই দলের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি আগামী মঙ্গলবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮৩/৭ (সল্ট ১৩, বাটলার ৮৪, জ্যাকস ৩৭, বেয়ারস্টো ২৫, ব্রুক ১, মইন ৪, লিভিংস্টোন ২*, জর্ডান ৩, আর্চার ১২*; আফ্রিদি ৪-০-৩৬-৩, আমির ৪-০-৩৪-০, ইমাদ ৪-০-১৯-২, রউফ ৪-০-৩৪-২, শাদাব ৪-০-৫৫-০)
পাকিস্তান: ১৯.২ ওভারে ১৬০ (রিজওয়ান ০, সাইম ২, বাবর ৩২, ফাখার ৪৫, শাদাব ৩, আজম ১১, ইফতিখার ২৩, ইমাদ ২২, আফ্রিদি ৯, আমির ৫, রউফ ৩*; মইন ৪-০-২৬-২, টপলি ৩.২-০-৪১-৩, আর্চার ৪-০-২৮-২, জর্ডান ৪-০-৩১-১, রাশিদ ৩-০-২৫-১, লিভিংস্টোন ১-০-৯-১)
ফল: ইংল্যান্ড ২৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জস বাটলার
সিরিজ: ৪ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ইংল্যান্ড।