Thursday, September 19, 2024
Homeঅপরাধননদের বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা হয় অস্ট্রেলিয়া ফেরত রেহেনাকে

ননদের বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা হয় অস্ট্রেলিয়া ফেরত রেহেনাকে

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ নিখোঁজের দুই মাস পর আশুলিয়া থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী রেহেনা পারভীন (৩৭) নামের এক নারীর অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে আশুলিয়ার মনোদিয়া চওরাপাড়া গ্রামের পাপিয়া আক্তারের নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় রেহেনার ননদ পাপিয়া আক্তার ও চাচা শ্বশুর আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত নিহতের স্বামী আওলাদ হোসেন নিখোঁজের পর পর অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গেছেন বলে দাবি পরিবারের। ঢাকা জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, গত ৮ সেপ্টেম্বর রেহেনা পারভীনের মা নবাবগঞ্জ থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন নিহতের স্বামী আওলাদ হোসেন (৪৭), তার চাচা শ্বশুর আমজাদ হোসেন (৬৪), ননদ পাপিয়া আক্তার (৩৬) ও অপর একজন মাকসুদা।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নিহত রেহেনা ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার পাতিল গ্রামের লেহাজ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি স্বামী আওলাদ হোসেন ও পাঁচ ছেলে-মেয়েসহ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করতেন। রেহেনা পারভীন গত ২ঌ জুন তার ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এর পরদিন তিনি তার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি চলে যান। গত ৩ জুলাই বিকাল ৫ টার দিকে রেহেনা তার মাকে ফোন করে জানান, তাকে মারধর করা হয়েছে।

এরপর তার স্বামীর বাড়ি লোকজন তার মাকে জানায়, চিকিৎসার জন্য রেহেনাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এরপর খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছিল না তার। এরপর বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ান অ্যাম্বাসিকে অবগত করে রেহেনার পরিবার। এর মধ্যেই নিহত রেহেনার স্বামী আওলাদ হোসেন গত ১৩ জুলাই অস্ট্রেলিয়া চলে যান। নিহতের মা আইরিন আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মেয়েকে অনেক কষ্টে লেখাপড়া করিয়েছি।

পরে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাই। সেখানে সে নাগরিকত্ব পায়। পরে আওলাদ এক পর্যায়ে জোরজবরদস্তি করে বিয়ে করে আমার মেয়েকে। অস্ট্রেলিয়ায় থাকাকালীন আমার মেয়ের অনেক সম্পদ হয়। আমার মেয়ে নিজ নামে সব সম্পদ করে। সেই সম্পদের জন্য আওলাদ, আওলাদের বোন, ভাইসহ পুরো পরিবার আমার মেয়েকে কৌশলে হত্যার পর লাশ গুম করে। হত্যার দুই মাস পর আজ পুলিশ আমার মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

আশুলিয়া থানার নবীনগর ক্যাম্পের ফাঁড়ি ইনচার্জ অলক কুমার দে বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে নরসিংদী ও আশুলিয়া থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য পাওয়া গেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই আসামির বাড়ির উঠান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঢাকা জেলার সিনিয়র সহকারী সুপার (দোহার সার্কেল) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘জুনের শেষের দিকে রেহানা পারভীন দেশে আসেন। ঠিক তার কয়েকদিন পরে তার স্বামী আওলাদ হোসেন অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে আসেন। তারা দুজনেই অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তারা ২০ বছর ধরে সংসার করছেন সেখানে। তাদের পাঁচজন সন্তান রয়েছে।

তবে তাদের বেশিরভাগ সম্পত্তি বাংলাদেশে। সেগুলো দেখতে রেহেনা পারভীন মাঝেমধ্যেই দেশে আসেন। তবে সেই সম্পত্তি অধিকাংশ রেহেনা বেগমের নামে। এর জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রেহেনা পারভীনকে তুলে নিয়ে হত্যার পর আশুলিয়ার নয়ার হাটের একটি নির্মাণাধীন বাড়ির উঠানে মাটি খুঁড়ে পুতে রাখে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments