Sunday, September 8, 2024
Homeজাতীয়দুর্নীতিবাজদের ছাড় নয়

দুর্নীতিবাজদের ছাড় নয়

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যখন হাত দিয়েছি, আমি ছাড়ব না। আপন-পর জানি না, দুর্নীতি যেখানে হোক, যেই হোক, আমি তাকে ধরবো। জিরো টলারেন্স যখন বলেছি, তখন এটা করেই ছাড়ব। সম্প্রতি চীন সফর সম্পর্কে জানাতে গতকাল বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাসায় কাজ করে গেছে, পিয়ন। সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না! কী বলব, এটাই বাস্তব। আমি জানতে পেরে তার কার্ড সিজ করেছি, তাকে চাকরি থেকে বের করে দিয়েছি।

যা করার আমি ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে, তাদের থামিয়েছি। এখন আমরা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছি। দুর্নীতিবাজদের ধরছি। এটা চলতে থাকবে। অনেকে আমাকে বলেন, এটা করলে সরকারের ইমেজ নষ্ট হবে। আমি সেটা মনে করি না। যারা অপরাধ করছে, দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে; তাদের ধরতে হবে। এক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না। সেখানে কে আপন, কে পর-সেটা বিবেচনায় না এনে যে এ ধরনের অপরাধে জড়িত, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, প্রশ্নপত্র ফাঁস, কোটা আন্দোলন, সরকারবিরোধী গুজব, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলাসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।  সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মূলমঞ্চে ছিলেন সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ডাক টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান।

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এত ক্ষোভ কেন : চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরাও পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে। আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবনবাজি রেখে, সংসার ফেলে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে, দিনরাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি ভেঙে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে এ দেশের বিজয় এনেছে। তারা বিজয় এনেছিল বলে সবাই উচ্চপদে আসীন।

কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, একবার তারা এ ধরনের আন্দোলন, শুধু আন্দোলন না, যেসব ঘটনা ঘটাচ্ছিল, আওয়ামী লীগ অফিসে আক্রমণ, মানুষের ওপর আঘাত করা। দেশের জ্ঞানী-গুণী আছে ঘরের ভিতর বসে মিথ্যা-অপপ্রচার রেকর্ড করে ছেড়ে দিল। এসব দেখে আমি খুব বিরক্ত হয়ে যাই। তখন একপর্যায়ে আমি বললাম, ঠিক আছে কোটা বাদই দিলাম। সেটার উদ্দেশ্য ছিল কোটা বাদ দিলে কী হয় তা দেখা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন কী অবস্থা হয়েছে। বেশি দূর যাওয়া লাগবে না। সর্বশেষ বিসিএসে দেখেন, ফরেন সার্ভিসে দুজন মেয়ে নিয়োগ পেয়েছে, পুলিশে চারজন। নারী অধিকারের কথা বলি। সব ধরনের ব্যবস্থা করছি। বঙ্গবন্ধু নারীদের জন্য ১০ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রেখেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম যে কোটা পূর্ণ হবে না, যারা তালিকায় পরবর্তীতে থাকবে তাদের সেখানে নিয়োগ দেওয়া হবে। সেটাই আমরা শুরু করে দিয়েছিলাম। তারপর যখন আন্দোলন শুরু হলো সব বন্ধ করলাম। তিনি বলেন, আমাদের দেশের নারীরা সচিব, ডিসি, এসপি হবে কোনো দিন ভাবিনি। এমনকি কোথাও পদায়ন ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথম সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে নারী নিয়োগ দিয়েছিলাম। প্রশাসনে প্রথম নারী সচিব আমি করি। ডিসি, এসপি, ওসিসহ সব জায়গায় নারীদের অবস্থান নিশ্চিত করেছি। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে আনার জন্য কোটা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সেই সময় (২০১৮) যারা আন্দোলন করেছিল, সেখানে নারীও ছিল। যারা বলেছিল নারী কোটা চায় না, মেধা দিয়ে চাকরি করব, সে কি চাকরি পেয়েছে? সে কি বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে? বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে পাস করেছে? এই বড় কথাগুলো না বলত, কোথাও না কোথাও চাকরি করত। দেশের সব এলাকা সমানভাবে উন্নত নয়। অনগ্রসর সম্প্রদায় আছে। সেসব মানুষের কি কোনো অধিকার থাকবে না। সেটা বিবেচনা করে প্রত্যেক জেলা থেকে মানুষ চাকরি পায় সেই ব্যবস্থা। কোটা বন্ধ করার পর হিসাবটা কী দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো জেলা, ২৩ জেলার একটা লোকও পুলিশে চাকরি পায়নি বা প্রশাসন বা কোথাও না।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments