
আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৯ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় মেট্রো স্টেশনের গেট নম্বর ১-এর সামনের একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে।
পুলিশ জানায়, বিস্ফোরিত গাড়িটি হরিয়ানা নম্বর প্লেটযুক্ত হুন্দাই আই-২০ মডেলের। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে আগুন ধরে যায় এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সড়কে ছড়িয়ে ছিল মানব শরীরের ছিন্নভিন্ন অংশ।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণে একজনের শরীর টুকরো হয়ে যায়। আরেকজনের হাত পড়ে থাকতে দেখেছি রাস্তায়। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের ভবনের জানালা-দরজা কেঁপে ওঠে। স্থানীয়রা বলেন, ‘আমরা জীবনে এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখিনি।’
তদন্তে একাধিক সংস্থা
ঘটনার পরপরই দিল্লি পুলিশ, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ), ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) ও ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল)-এর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সব সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঘটনা অবহিত করেছেন। দিল্লি পুলিশ কমিশনার, এনআইএ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়মিত তথ্য দিচ্ছেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই হরিয়ানার ফরিদাবাদে দুটি বাসা থেকে প্রায় তিন হাজার কিলোগ্রাম বিস্ফোরক উদ্ধার করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। এ ঘটনায় জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহে দুই চিকিৎসক—আদিল রাঠার ও মুজাম্মিল শাকিল—কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাড়তি সতর্কতা জারি
বিস্ফোরণের পর দিল্লির পাশাপাশি মুম্বাই, উত্তরপ্রদেশ, জয়পুর ও উত্তরাখণ্ডে উচ্চ সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে। গোটা এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে। আহত এক অটোরিকশাচালক জিশান জানান, আমার সামনে থাকা গাড়িটি হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়। কী ছিল বুঝিনি, কিন্তু মুহূর্তেই আগুনের বিশাল গোলা দেখা গেল।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি বাড়ির ছাদ থেকে বিশাল আগুনের গোলা দেখেছি। বিস্ফোরণের শব্দে জানালা কেঁপে ওঠে। প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের কারণ নিশ্চিত না হলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি পরিকল্পিত হামলা নাকি দুর্ঘটনা—তা নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
