আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া বুধবার সকালে একাধিক স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ঠিক এক সপ্তাহ পরই দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতারা একসঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছাকাছি এলাকা থেকে উত্তর-পূর্বমুখে ছোড়া হয়। এগুলো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (প্রায়২১৭ মাইল) উড়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সমুদ্রে না পড়ে স্থলভাগে গিয়ে পড়েছে। এটি ছিল উত্তর কোরিয়ার চলতি বছরের মে মাসের পর প্রথম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সমর্থনে জাতিসংঘের আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই দেশটি এ পরীক্ষা চালায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিক্ষেপের আগে ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত গতিবিধি শনাক্ত করা হয় এবং পরবর্তীতে সেগুলো রাডারে ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য বিনিময় করছে। ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এবং প্রেসিডেন্টকে পুরো ঘটনার বিস্তারিত জানানো হয়। অন্যদিকে, জাপানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে জাপানের নিরাপত্তায় কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে টোকিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য আদান–প্রদান করছে।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া সর্বশেষ ৮ মে একাধিক স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। পরমাণু অস্ত্রধারী এই দেশটি গত এক দশক ধরে ধাপে ধাপে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি শক্তিশালী করেছে। যদিও জাতিসংঘের একাধিক নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল আছে। সম্প্রতি দেশটি তাদের নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একটি সামরিক কুচকাওয়াজে প্রদর্শন করেছে যেখানে চীনের প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আসন্ন এপেক সম্মেলনের আগে উত্তর কোরিয়ার এই নিক্ষেপ সম্ভবত একটি রাজনৈতিক বার্তা।