আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ তীব্র দাবদাহে বগুড়ার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জেলায় তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। গরমে হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগী। তাদের বেশিরভাগই বয়স্ক ও শিশু। শিশুদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত। আর বয়স্করা বেশির ভাগই হিটস্ট্রোক এবং পানিশূন্যতায় ভুগছেন। হঠাৎ রোগীর চাপ বাড়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
চলতি এপ্রিলের শুরু থেকে বগুড়ায় তীব্র গরমে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বগুড়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বাড়ছে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগী। মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শনিবার ১৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত। আর পুরুষ ওয়ার্ডে ১৫ জন রোগী। যারা সর্দি, জ্বর ও পানি শূন্যতার কারণে ভর্তি হয়েছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেক বেড়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা গ্রামের মোছাঃ সুইটি বেগম জানান, গত চার দিন আগে তিন মাস বয়সের শিশু সন্তানকে নিউমোনিয়ার কারণে ভর্তি করান। চিকিৎসায় শিশুটি আগের চেয়ে ভালো আছে। মোকামতলা থেকে আসা দুলালী খাতুন বলেন, গত শুক্রবার হঠাৎ আমার ৮ মাস বয়সের শিশু পাতলা পায়খানা করে। পরে ওই দিন বিকালে মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করাই। ডাক্তার এবং নার্সদের সেবায় সন্তান ভালো আছে।
মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আরএমও ডাঃ শফিক আমিন কাজল জানান, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গরমের কারণে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন ২০০ থেকে আড়াই’শ রোগীকে বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। দাবদাহের কারণে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগী আসছেন হাসপাতালে।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। বাইরে থেকে ফিরে এসির নিচে বসা, ঠাণ্ডা পানি খাওয়া, রাস্তার পাশের বিভিন্ন ধরনের শরবত এবং খোলা খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সঙ্গে জ্বরের পাশাপাশি ঘণ্টায় তিনবারের বেশি বমি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। গরমে প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। সেই সাথে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নেয়ার আহবান জানান। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপপরিচালক ডা: ওয়াদুদ জানান, ঈদের পর থেকেই হাসপাতালে বহিঃবিভাগ ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়ার রোগীর চাপ বাড়ছে। বর্তমানে অনেক রোগী ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি রোগীদের বেশির ভাগই শিশু।