Saturday, November 23, 2024
Homeজাতীয়তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান হতে হবে

তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান হতে হবে

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে মতপার্থক্য দূর করার উপায় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে, এতে কোনো দেশেরই লাভ হচ্ছে না। ঢাকায় নিজ সরকারি বাসভবনে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস এ কথা বলেন। পিটিআই নিউজের ওয়েবসাইটে গতকাল এ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টনের বিষয়টি অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হতে হবে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর অধিকার সমুন্নত রাখার সুনির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি (পানিবণ্টন) নিয়ে বসে থাকার ফলে এটা কোনো কাজে আসছে না। যদি জানি যে, আমি কতটুকু পানি পাব, তাহলে এটি ভালো হতো। এমনকি পানির পরিমাণ নিয়ে যদি আমি খুশি নাও হই, তাতেও সমস্যা নেই। বিষয়টির সমাধান হতেই হবে। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টি সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে শিগগিরই তাড়া বা ‘চাপ’ দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, নতুন সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। ‘চাপ’ শব্দটি অনেক বড়। আমি এ কথা বলছি না। আমরা আলোচনা করব। তবে আমাদের একসঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। ২০১১ সালে ঢাকায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।

তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ চুক্তিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে আর চুক্তি হয়নি। তখন মমতা দাবি করেছিলেন, তার রাজ্যেই পানির সংকট রয়েছে। এ বিষয়ে পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়, বরং খুবই পুরনো বিষয়। আমরা বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে কথা বলেছি। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই এ নিয়ে আলোচনা শুরু। আমরা সবাই যখন ওই চুক্তি চূড়ান্ত করতে চেয়েছি, এমনকি ভারত সরকারও প্রস্তুত ছিল; তখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এর জন্য তৈরি ছিল না। আমাদের এটির সমাধান করতে হবে।

বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট অধিকার সমুন্নত রাখতে চাওয়ার অধিকার থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনে এ বিষয়ে সমাধান করতে হবে। ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে এবং আমরা সেই অধিকার চাই। বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি এবং এ বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করে ঢাকা থেকে গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর প্রসঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, চুক্তি সইয়ের আগে এমন সংকট মোকাবিলায় একটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা যেতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, যখন ভারতের হাইকমিশনার আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন, আমি বলেছি, বন্যার সময় পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা অধিকতর ভালো ব্যবস্থাপনার ওপর কাজ করতে পারি। দুই দেশের মধ্যে এমন সমন্বয়ের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো চুক্তির প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে একসঙ্গে কাজ করতে ও এর সমাধান করতে পারি। কেননা এটি গণমানুষের দুর্দশা লাঘব করবে। এ ধরনের মানবিক পদক্ষেপ সত্যিকার অর্থেই সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments