আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে গতকাল রাতে সুধী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যে তারুণ্যের বুকের রক্তের বিনিময়ে জাতি ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে আমরা সেই তারুণ্যনির্ভর মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। একটা শিশু জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন নাগরিকের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে, তা হবে হিংসা-হানাহানি ও সন্ত্রাসমুক্ত। স্বপ্নের সেই বাংলার তরুণরা আল্লাহকে ভয় করবে। মানুষকে ভালোবাসবে। বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়াবে। কোনো তদবির চলবে না। যোগ্যতায় চাকরি পাবে প্রার্থীরা। নারীদের সম্ভ্রমহানি হবে না। তিনি বলেন, দল-ধর্ম যার যার, দেশ আমাদের সবার। জেলা জামায়াতের আয়োজনে সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেম। সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়ার্দার।
এদিকে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে গতকাল সকাল ১০টায় জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে না, তাদের আবার কীসের নির্বাচন। তারা তিনটি নির্বাচনের নামে তান্ডব চালিয়েছে। তারা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। তারা এ দেশের ১৮ কোটি মানুষকে প্রতিপক্ষ ভেবে নির্যাতন করেছে। মানুষের জন্য তাদের মায়া-ভালোবাসা ছিল না বলেই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার বুকে নির্বিচার গুলি চালিয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পতিত সরকার তাদের সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে, যা দেশের জাতীয় বাজেটের ৫ গুণ। তারা তাদের আমলে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম, অপহরণ, বাড়িঘর, অফিস-আদালত লুট করে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। দেশপ্রেমিক প্রতিটি দল ও সাধারণ মানুষের ওপর এমন নির্র্যাতন করেছে। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে, নিষিদ্ধ করেছে। দেশের হাজারো আলেম-ওলামাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে টেনেহিঁচড়ে জেলে নিয়েছে। তিনি বলেন, ইজ্জত দেওয়ার মালিক আল্লাহ। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন আবার প্রয়োজনে কেড়ে নেন। গণভবনে সেদিন রান্না হয়েছিল; কিন্তু কপালে সেই খাবার লেখা ছিল না।
জামায়াত ছাত্র আন্দোলনের সব শহীদের বাড়িতে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছে। সব আহতের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও আন্তরিকতার সঙ্গে আহতদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানান তিনি। ডা. শফিক আশা করেন দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে এ সরকার ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যাবে।
জামায়াত আমির আরও বলেন, আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্ত হয়েছি অন্য কোনো জায়গায় বন্দি হওয়ার জন্য নয়। আমাদের দিকে কেউ লাল চোখে তাকালে বরদাশত করব না। আমরা বিদেশি বন্ধু চাই, প্রভু চাই না। আমরা সমমর্যাদার ভিত্তিতে বৈদেশিক সম্পর্ক রাখতে চাই।