Tuesday, November 12, 2024
Homeআন্তর্জাতিকট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন, চ্যালেঞ্জের মুখে খামেনি

ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন, চ্যালেঞ্জের মুখে খামেনি

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভূমিধস জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন ট্রাম্প। সেদিন থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, দুই-ই পাবেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ফিরে আসা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জন্য মোটেই আশাব্যঞ্জক নয় বলে ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ইরান ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোরাদ ভেইসি জানান, ট্রাম্পের প্রথম শাসনামলে খামেনি তার ঘনিষ্ঠ কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হারান। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকের বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হন। এছাড়া ইরানের তেল রপ্তানিতে ধস নামে ট্রাম্প আমলেই।

একইসঙ্গে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। চার বছর আগে খামেনি প্রায় নিশ্চিত ছিলেন যে ট্রাম্পের বিদায় তার জন্য অনেকটা স্বস্তি ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের রাজনৈতিকভাবে ফিরে আসা খামেনির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ালো। ট্রাম্পের বিজয়ের প্রথম তিন দিন কার্যত চুপ ছিলেন খামেনি। শুধু খামেনি বলেছেন, মার্কিন সব প্রেসিডেন্টই দুর্নীতিগ্রস্ত। তবে তিনি মার্কিন নির্বাচন বা ট্রাম্পের নাম মুখে নেননি। ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খামেনি হয়তো এখন বিকল্প চিন্তাভাবনা করছেন। তিনি ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেবেন নাকি বৈরী অবস্থান বজায় রাখবেন।

ইরানের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক আবদোলরেজা ফারাজি-রাদের মতে ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের উচিত ঐক্যমত্য গড়ে তোলার জন্য কাজ করা এবং ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। ফারাজি-রাদ উল্লেখ করেছেন যে ইরান থেকে পাঠানো বার্তার সুরের ওপর ট্রাম্পের কেমন জবাব হবে তা অনেকটা নির্ভর করছে। ফাজারি জোর দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্দেশ্য হবে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং পেজেশকিয়ানের উচিৎ হবে ভারসাম্য পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে এটি করা। মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ হামিদ আবুতালেবি জানিয়েছেন, মাসুদের উচিৎ ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানানো। তবে মাসুদ পেজেশকিয়ান খামেনি অনুমতি ছাড়া এটি করবেন না। এবং অন্যদিকে খামেনিও এমন উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করবেন।

কট্টরপন্থী ভাষ্যকার আব্বাস সালিমি নামিন অবশ্য পূর্ণ আস্থা ব্যক্ত করেছেন যে ইরান কখনোই ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবে না। ইরান ইন্টারন্যাশনাল বলছে, খামেনি নেতৃত্বাধীন ইরান গত ছয় বছর ধরে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে। দেশটির মুদ্রার মানও তলানিতে। খামেনি বর্তমানে শক্তিশালী ইসরায়েলের সঙ্গে লড়ছেন। তবে ইরানের প্রক্সি বাহিনীগুলো বর্তমানে গাজা এবং লেবাননে ধুঁকছে। তাই ট্রাম্পের আবার প্রত্যাবর্তন খামেনির জন্য দুঃস্বপ্ন।

এছাড়াও ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির রক্ষণশীল আইনপ্রণেতা আহমেদ নাদেরি। ইরান ইন্টারন্যাশনাল টিভির ইরান বিশ্লেষক মোর্তেজা কাজেমিয়ান বলেন, কাশেম সোলেইমানিকে হত্যার জন্য ট্রাম্প গর্ববোধ করেছিলেন। এখন ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন ইরানের বর্তমান নেতৃত্বের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments