আলোর যুগ স্পোর্টসঃ ১৯৪৮ থেকে ঢাকা ঘরোয়া ফুটবলের আগমন ঘটে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে স্বাধীনতা কাপ দিয়েই ঘরোয়া ফুটবল মাঠে গড়ায়। সেবারই ১৯৭০ সালের চ্যাম্পিয়ন ইপিআইডিসি ১৯৭২ সালে লিগের প্রথম ম্যাচ খেলে নবাগত ঢাকা আবাহনী ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ইপিআইডিসির নতুন নামকরণ হয় বিআইডিসি। উদ্বোধনী ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। তবে ১৯৭২ সালে লিগ আর শেষ হতে পারেনি।
প্রথম লেগে আবাহনী ও ওয়ান্ডারার্সের ম্যাচে ব্যাপক সংঘর্ষ হলে পরবর্তীতে বাফুফে লিগ স্থগিত করে দেয়। এরপর ১৯৭৩ সাল থেকে নিয়মিত লিগ হচ্ছে। ৫৩ বছরে লিগের নাম পরিবর্তন হয়েছে একাধিকবার। শুরুটা ঢাকা প্রথম বিভাগ নামে। ১৯৯৩ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নামে খেলা হয়। সর্বশেষ ২০০৭-০৮ মৌসুম থেকে পেশাদার ফুটবল লিগের অভিষেক হয়। যা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ নামকরণে হচ্ছে।
স্বাধীনতার পর বিজেএমসি, আবাহনী, মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ জামাল ধানমন্ডি, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, বসুন্ধরা কিংসসহ আটটি দল লিগে শিরোপার খাতায় নাম লিখিয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ বার মোহামেডান ও তৃতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার লিগ জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। স্বাধীনতার পর লিগ ছাড়াও হয়েছে নানা টুর্নামেন্ট।
যার শেষ সংযোজন চ্যালেঞ্জ কাপ, স্বাধীনতা কাপ, ফেডারেশন কাপ, লিবারেশন কাপ, বিটিসি কাপ, মা-মণি গোল্ড কাপ, জাতীয় লিগ ও সুপার কাপের আয়োজন হয়েছে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে অভিষেক হয় বসুন্ধরা কিংসের। লিগ ছাড়াও খেলেছে ফেডারেশন কাপ, স্বাধীনতা কাপ ও সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ কাপ। মাত্র ছয় বছরে চার টুর্নামেন্ট খেলেই দেশের ফুটবলে বাজিমাত করেছে বসুন্ধরা কিংস। এ অল্প সময়ের ১২টি ট্রফি জিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস।
ঢাকা আবাহনী স্বাধীনতার পর সব আসর মিলিয়ে ঘরোয়া ফুটবলে সর্বোচ্চ ৩৭ বার শিরোপা জয়ের রেকর্ড রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানের ঘরে উঠেছে ৩৪ শিরোপার ট্রফি। তবে দুটি দলই তো ঘরোয়া আসর খেলছে ১৯৭২ সাল থেকে। ৫২ বছরে দুই দল এতটা শিরোপা পেয়েছে। সে ক্ষেত্রে কিংসের বয়স মাত্র ছয় বছর। বাংলাদেশ নয়, যদি পূর্ব পাকিস্তান আমলও ধরা হয় তাহলে কিংস যে রেকর্ড গড়েছে তার ধারে-কাছেও কোনো দল নেই। একমাত্র তারাই শুরু থেকে একের পর এক ট্রফি জিতছে। আবাহনীর ১২ ট্রফি জিততে লেগেছে দেড় যুগ। অর্থাৎ ১৮ বছর। অন্যদিকে মোহামেডানের লেগেছে ১৫ বছর। সেখানে কি না কিংস মাত্র ছয় বছরে ১২ শিরেপা জিতেছে।
আবারও বলছি, এ পরিসংখ্যান ধরা হয়েছে স্বাধীনতার পর। আগে বা পরে যাই ঘটুক বসুন্ধরার মতো সংক্ষিপ্ত সময়ে কেউ ১২ ট্রফি জিততে পারেনি। পেশাদার লিগে মোহামেডান এখনো চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আবাহনী একবার হ্যাটট্রিকসহ সর্বোচ্চ ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ রেকর্ড এবার স্পর্শ করার সম্ভাবনা রয়েছে কিংসের। তাও আবার নতুন ইতিহাস গড়ে। টানা চার বারই লিগ জয়ের রেকর্ড নেই কারও। একমাত্র কিংসই টানা পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার পারলে তা হবে ডাবল হ্যাটট্রিক শিরোপার মাধ্যমে।