আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের মীরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ধীরে ধীরে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাড়ি-ঘর, জমি ও সড়কের ক্ষত স্পষ্ট হচ্ছে। এসব এলাকায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ সহায়তা। সড়ক ডুবে যাওয়ায় টানা তিনদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার পর বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রাকিব হাসান বলেন, চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মীরসরাই ও ফটিকছড়ি। এ দুই উপজেলায় ইতিমধ্যে বন্যার পানি অনেকাংশে কমে গেছে। আমরা এখন বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ যেন না হয়, সেটা নিয়ে কাজ করছি। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেড, স্যালাইনসহ অন্যান্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের তালিকা যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে করা যায় এবং কত ক্ষতি হয়েছে, তা বের করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি।
জানা গেছে, ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে আসায় মীরসরাই উপজেলার করেরহাটসহ কয়েকটি এলাকায় পানি কমে এসেছে। কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, ধূম, নাহেরপুর, বাংলাবাজার, মোবারক ঘোনা, কাটাগাং, খৈয়াছরা, মায়ানী, মঘাদিয়া, ইছাখালীতে অনেক বন্যার্ত মানুষ এখনো দুর্ভোগে আছেন।
উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ছেড়ে যায়নি বানভাসিরা। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে। নাজিরহাট মন্দাকিনী সড়ক, চাঁন গাজী সড়ক, বংশাল সড়ক, ধলই কাজী পাড়া সড়ক, কাটিরহাট-যুগীরহাট সড়ক, ধলই-গুমানমর্দন সড়ক, গুমানমর্দন ডিসি সড়ক, মুৎসুদ্দি পাড়া সড়ক, মাস্টার পাড়া সড়ক, চারিয়া মুরাদ সড়ক, মীরেরহাট মোহাম্মদপুর সড়ক, ইছাপুর চাঁনগাজী সড়ক, মুফতি ফয়েজুল্লা সড়ক, সুবেদার পুকুর পাড়, পুন্ডরিক ধাম সড়কসহ বেশকিছু গ্রামীণ সড়কে এখনো পানি জমে আছে। বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফটিকছড়িতে। ৮১টি সড়ক সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৮টি সেতু ও ১৩৬টি কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সড়কে এখনো পানি রয়েছে। উপজেলার সুন্দরপুর, হারুয়ালছড়ি, নাজিরহাট পৌরসভা, সুয়াবিল, দাঁতমারা ও ভূজপুরে সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, কাপ্তাই বাঁধ খুলে দেওয়ার পর বড় কোনো প্রভাব পড়েনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ভাটি এলাকায়। গত ৬ দিন কয়েক ফুট পানির নিচে থাকার পর রবিবার থেকে পানি নামতে শুরু করেছে শস্য ভান্ডার খ্যাত গুমাইবিল থেকে। পাশাপাশি বিলে বন্যার পানি সহনশীল জাতের আমন চারার আবাদ হওয়ায় ফসল খুব বেশি নষ্ট হয়নি। চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলমান বন্যায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, কিছু ক্ষতি চিহ্নিত করা গেলেও সম্পূর্ণভাবে পানি নেমে গেলে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।