আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ‘এখানে এলে গ্রেপ্তার হতে পারেন’— এমন সতর্কবার্তার পর পোল্যান্ড সফর বাতিল করেছেন নেতানিয়াহু। দেশটির সংবাদমাধ্যম রিজেকপসপলিটাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন পোল্যান্ডের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাদিস্লো বার্তোসজেউস্কি । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নাৎসী বাহিনী পোল্যান্ড ও আশপাশের দেশগুলোর ইহুদিদের যেসব বন্দি শিবিরে অবরুদ্ধ করে রাখত, সেগুলোকে বলা হয় আউশউইৎজ। পোল্যান্ডজুড়ে এমন কয়েকটি কিছু আউশউইৎজ রয়েছে।
১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সল পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এই ছয় বছরে পোল্যান্ডের আউশউইৎজ গুলোতে হত্যা করা হয় প্রায় ১০ লাখ ১০ হাজার ইহুদিকে। নিহত এই ইহুদিদের প্রায় সবাই পোল্যান্ড এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর এসব আউশউইৎজ মুক্ত করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে আউশউইৎজ মুক্তি উদযাপন করে পোল্যান্ড। আগামী জানুয়ারি মাসে ছিল ৮০ তম মুক্তি উদযান অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
শনিবার রিজেকপসপলিটাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পোল্যান্ডের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি যে, যদি তিনি (নেতানিয়াহু) পোল্যান্ড সফরে আসেন আসেন, তাহলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিসি) পরোয়ানা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পোল্যান্ড সরকার; কারণ, আমরা আইসিসির নির্দেশনা মেনে চলার জন্য চুক্তিবদ্ধ।” “আমরা এই বার্তা দেওয়ার পর ইসরায়েলের সরকার আমাদের জানিয়েছে যে তিনি এবার পোল্যান্ডে আসছেন না।”
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্মম সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ এবং সেখানকার বাসিন্দাদের খাবার, পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে গত নভেম্বরে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিসি)।
ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ অনেক দেশ এখনও আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জোটভুক্ত ২৭টি দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের প্রায় সব দেশ আইসিসির সনদে স্বাক্ষর করেছে। সনদে সাক্ষরকারী দেশগুলো আইসিসির যে কোনো নির্দেশনা মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা এ ইস্যুতে কথা বলতে রাজি হননি।