আলোর যুগ স্পোর্টসঃ এজবাস্টনের রোদেলা দুপুরে যখন ব্যাট ছুড়ে শূন্যে উল্লাস করলেন শুভমান গিল, তখনই লিখে ফেলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন অধ্যায়। ২৫ বছর বয়সী এই অধিনায়ক ৩১১ বলেই স্পর্শ করেন ডাবল সেঞ্চুরির মাহাত্ম্য, আর ইনিংস থামান ২৬৯ রানে—যা একে গড়ে তোলে রেকর্ডের পাহাড়।
ডাবল সেঞ্চুরির পর শূন্যে ছোঁড়া ব্যাট, মাথার ওপর তুলে ধরা হেলমেট আর উঁচিয়ে ধরা ব্যাটের ভঙ্গিতে গিল বুঝিয়ে দিলেন, এই কীর্তি শুধু ব্যক্তিগত নয়—পুরো দেশের গৌরব। ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরির অনন্য রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
এজবাস্টনের এই ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ৩১১ বল খেলে ২০০ ছুঁয়ে থামলেন না গিল; শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ২৬৯ রানে মাঠ ছাড়লেন। এটিই তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা স্কোর, আর ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ রান, ভেঙে দিলেন বিরাট কোহলির ২০১৯ সালের ২৫৪* রানের রেকর্ড।
চার নম্বর পজিশনে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরের মালিকও এখন গিল; এ কীর্তিতে টেন্ডুলকার‑দ্রাবিড়‑কোহলিদের পেছনে ফেলেছেন তিনি। পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো সিম‑বান্ধব কন্ডিশনে উপমহাদেশের কোনো অধিনায়কের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির কৃতিত্বও তার দখলে।
ইংল্যান্ড সফরকারী অধিনায়কদের মধ্যে গিলের ইনিংসটি তৃতীয় সেরা—তার ওপরে কেবল গ্রায়েম স্মিথ (২৭৭) ও বব সিম্পসন (৩১১)। ভারতের পক্ষে ইংল্যান্ডে এর আগে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মাত্র দুই কিংবদন্তি, সুনীল গাভাস্কার (২২১, ১৯৭৯) ও রাহুল দ্রাবিড় (২১৭, ২০০২); দু’জনকেই ছাপিয়ে গিল এখন ইংল্যান্ডে ভারতের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসের মালিক।
গিল হলেন ভারতের ষষ্ঠ অধিনায়ক, যিনি টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি করলেন; তার আগে পাতৌদি, গাভাস্কার, টেন্ডুলকার, ধোনি ও কোহলি এই সম্মানে ভূষিত হন। তবে দেশের বাইরে কোহলির (২০১৬, অ্যান্টিগা) পর দ্বিতীয় ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে দ্বিশতককে ছুঁয়েছেন গিল। বয়সের বিচারে শুধুমাত্র মানসুর আলি খান পাতৌদি (২৩) ও গ্রায়েম স্মিথ (২২) তার চেয়ে কম বয়সে অধিনায়ক হয়ে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন।
টেস্ট ও ওয়ানডে দুই সংস্করণেই ডাবল সেঞ্চুরির পাশাপাশি টি‑টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির কীর্তি গিলকে টেনে নিয়ে গেছে আরেক উচ্চতায়। এই ত্রি‑মাইলফলক এর আগে ছিল কেবল ক্রিস গেইল ও রোহিত শর্মার ঝুলিতে; তবে ২৫ বছর বয়সে এই সাফল্যের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করা একমাত্র ক্রিকেটার এখন শুভমান গিল।