আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৭১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ আরও সাতজন অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত এক দিনে হাসপাতালগুলোতে ৭২টি মৃতদেহ আনা হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৩৫৬ জন, ফলে ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫৯ জনে। তবে এখনও বহু মরদেহ ধ্বংসস্তূপে আটকে আছে এবং রাস্তায় পড়ে আছে, উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৮৭ জনের বেশি। এ নিয়ে গত ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৪৬৫ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৯৪৮ জনে।
মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, গত এক দিনে শিশুসহ আরও সাতজন ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন। এ নিয়ে অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১১ জনে, যাদের মধ্যে ১৪২ জন শিশু।
শুধু জাতিসংঘ সমর্থিত ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা IPC গাজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ অঞ্চল ঘোষণা করার পর গত মাসে অন্তত ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে ২৭ জন শিশু। গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ২৪ লাখ মানুষ চরম দুর্ভিক্ষে পড়েছে।
এদিকে, ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত আরও ১২ হাজার ১৭০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৫১ হাজার ৮১৮ জন। এতে জানুয়ারির অস্ত্রবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেস্তে গেছে।
এর আগে, গত নভেম্বরেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।