আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার গাজার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের জর্ডান ও মিশরে স্থানান্তরের একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে বিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ স্বাগত জানালেও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে হামাস ও ইসলামিক জিহাদ তীব্র বিরোধিতা করেছে।
ট্রাম্প জানান, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও আলোচনার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। মানুষজন মারা যাচ্ছে। আমি চাই আরব দেশগুলো এগিয়ে এসে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক। নতুন জায়গায় হয়তো তারা শান্তিতে থাকতে পারবে।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী স্মোটরিচ এই প্রস্তাবকে অভিনব সমাধান হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করার বদলে অন্যত্র নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ পাওয়া ভালো। এই ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার সঙ্গে কাজ করব। গাজার অধিকাংশ বাসিন্দা শরণার্থী বা তাদের উত্তরসূরি। তাদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব আরব বিশ্বে ১৯৪৮ সালের নাকবার স্মৃতি উসকে দিতে পারে।
ইসলামিক জিহাদ ট্রাম্পের প্রস্তাবকে যুদ্ধাপরাধের উৎসাহ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা জানিয়েছে, আমাদের জনগণকে তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। হামাসও এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেছে, বিগত দশকগুলোতে যেমন সব স্থানান্তর পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে, তেমনই এই পরিকল্পনাও আমাদের জনগণ রুখে দেবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ মানুষের মৃত্যু হয় এবং ২৫০ জন জিম্মি হন। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায়, যাতে ৪৭,০০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাংশ এটিকে গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করলেও ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গত সপ্তাহে কার্যকর হওয়া একটি যুদ্ধবিরতির আওতায় কিছু ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং ইসরায়েলে আটক কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছাড়ার বিনিময়ে এই চুক্তি কার্যকর হয়।