আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট যানজটে কার্যত অচল ও স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। চলছে শিক্ষার্থীদের ব্লকেড কর্মসূচি। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে এই আন্দোলন চলছে। এতে ভিড় বাড়ছে মেট্রোরেলে। বুধবার তৃতীয় দফায় সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ফলে রাজধানীর আগারগাঁও, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, বাংলা মোটর, শাহবাগ ও পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন থেকে শিক্ষার্থীদের খণ্ড খণ্ড মিছিল শাহবাগের দিকে নিয়ে আসেন। ধীরে ধীরে শাহবাগ মোড়ে বাড়তে থাকে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা। শাহবাগ মোড়ে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও দেখা গেছে। সকাল থেকেই রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। মহাখালীতেও অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। অনেকের হাতেই প্ল্যাকার্ড, ব্যানার দেখা যায়।
এদিকে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায় এক মাসের জন্য স্থগিত করে আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছেন তা মানবেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নয়। সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা থাকতে পারে। সংসদে আইন পাস করে বাকি কোটা বাতিল করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন তারা।
আজ বুধবার হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহালের রায়ে এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এর পরই আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ বার্তা পাঠিয়ে এই প্রতিক্রিয়া দেয়।
এতে আদালতের আদেশ নিয়ে তাদের অবস্থান জানানো হয়। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল হয়। পরে এ নিয়ে শাহবাগ মোড় দখল করে আন্দোলন শুরু হয়। রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানেই আন্দোলন চলছে শিক্ষার্থীদের। এক পর্যায়ে হাইকোর্টের রায় নিয়ে রিট করা হয়। এ নিয়ে শুনানি হয় বুধবার।