আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ জাতীয়ভাবে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে পরস্পরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছেন কমলা ও ট্রাম্প। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নির্বাচনের দিন হলেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আগাম ভোট গ্রহণ আগেই শুরু হয়েছে এবং শনিবার রাত ৯টা নাগাদ প্রায় ৮ কোটি ভোট (সশরীরে কেন্দ্রে এবং ডাকযোগে) জমা পড়েছে বলে জানা গেছে। আর এভাবেই এবারের নির্বাচনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা দৃশ্যমান হচ্ছে। কারণ, এ নির্বাচনের ফলাফলের ওপর মার্কিন গণতন্ত্রের গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস যদি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যান, সেটা আরব বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের কারণেই হবে। ইয়েমেনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সামরা লোকমান এমনটাই ধারণা করছেন।
সামরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আরব আমেরিকানদের ভোট নিশ্চিতভাবেই ডেমক্র্যাট প্রার্থীরা পেয়ে আসছেন। গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধ সমর্থনের জন্য এবার ডেমোক্র্যাটদের মূল্য দিতে হবে।
মিশিগানের ডিয়ারবোর্ন শহরের উপকণ্ঠ ডেট্রয়টে নিজের অফিসে বসে আল-জাজিরার সঙ্গে আলাপকালে সামরা বলেন, ‘কমলা হ্যারিস যদি হারেন, তাহলে আমি বলব, এই কমিউনিটির কারণে তাঁকে হারতে হয়েছে। গাজার কারণে, সেখানে গণহত্যার কারণে তাঁকে হারতে হয়েছে।’
গাজা ও লেবাননে ভয়াবহ নৃশংসতা সত্ত্বেও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে সামরার মতো অনেক আরব বংশোদ্ভূত মার্কিন হতাশ হয়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ছেড়ে যাচ্ছেন। পরিবর্তনের আশায় তাঁরা ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন।
মুসলিম ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বক্তব্য দেওয়ার পরও ট্রাম্প এসব ভোটারের কাছে গেছেন। ডিয়ারবোর্নে তিনি অভিবাসী ও মুসলিমদের মধ্যে প্রচার চালিয়েছেন। সেখানে গত শুক্রবার আরব বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন।
সামরার নেকলেসে ফিলিস্তিনের মানচিত্র, আল আকসা মসজিদের গম্বুজ আর ফিলিস্তিনি পতাকা শোভা পাচ্ছিল। তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, মুসলিমদের ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া জুয়া ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু কমলাকে সমর্থনের অর্থ নিশ্চিত পরাজয়। কারণ, তিনি ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েই যাবেন।
ইয়েমেনি বংশোদ্ভূত এই নারী বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলেও ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালু থাকার আশঙ্কা ৯৯ ভাগ। যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা ১ ভাগ। কিন্তু কমলার অধীনে গণহত্যা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা শতভাগ।সামরা আরও বলেন, ট্রাম্পকে সমর্থনের অর্থ এই নয় যে তাঁর আগের মেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যসংক্রান্ত উদ্যোগ ভালো ছিল। বরং এর মাধ্যমে ইসরায়েলের প্রতি বাইডেন–কমলা প্রশাসনের অভূতপূর্ব সামরিক সমর্থনের বিষয়ে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্টকে কিছুটা হলেও জবাবদিহির আওতায় আনা আসল লক্ষ্য।