আলোর যুগ স্পোর্টসঃ কামিন্দু মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কার ফিফটিতে বড় সংগ্রহই গড়ল শ্রীলঙ্কা। তবে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পথ দেখালেন ব্র্যান্ডন কিং ও এভিন লুইস। দুই ওপেনারের ফিফটিতে শক্ত ভিত পেয়ে যাওয়া ক্যারিবিয়ানদের জয়ের বন্দরে নিয়ে গেলেন শেরফেইন রাদারফোর্ড।
ডাম্বুলায় রবিবার (১৩ অক্টোবর) প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শ্রীলঙ্কার ১৭৯ রান তারা পেরিয়ে গেছে পাঁচ বল বাকি থাকতে। ৩ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর)একই মাঠে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে তারা।
দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান কামিন্দু ও আসালাঙ্কা ছাড়া শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটসম্যান বিশ রান পর্যন্ত যেতে পারেননি। কিং ও লুইসের শতরানের জুটিতেই জয়ের পথে অনেক দূর এগিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর দ্রুত কিছু উইকেট হারালেও জয়ের জন্য খুব একটা ভাবতে হয়নি তাদের।
বৃষ্টির কারণে আধঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ। ভেজা উইকেটের সুবিধা কাজে লাগাতে টস জিতে ফিল্ডিং নেন শেই হোপ। অধিনায়কের আশা পূরণ করতে সময় নেননি ক্যারিবিয়ান বোলাররা। পাওয়ার প্লের মধ্যে তারা নেয় দুই উইকেট। তৃতীয় ওভারে রোমারিও শেফার্ডের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের শর্ট বল কাট করার চেষ্টায় কট বিহাইন্ড হন পাথুম নিসাঙ্কা। পরের ওভারে শামার জোসেফের বলে আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন কুসাল পেরেরা।
শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার অভিযানে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার কুসাল মেন্ডিস। অষ্টম ওভারে গুডাকেশ মোটির চমৎকার ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন ১৬ বলে ১৯ রান করা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এরপর কামিন্দুকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক আসালাঙ্কা। দশম ওভারে মোটির বলে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন কামিন্দু। এক ওভার পর অভিষিক্ত শামার স্প্রিঙ্গারের ওভারে তিন চার মেরে তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বাগত জানান আসালাঙ্কা।
মাত্র ৩১ বলে পূর্ণ হয় তাদের জুটির পঞ্চাশ রান। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটিতে পৌঁছান কামিন্দু। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। স্প্রিঙ্গারের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে সীমানায় রোস্টন চেইসের হাতে ধরা পড়েন ৪০ বলে ৫১ রান করা কামিন্দু। তার বিদায়ে ভাঙে ৫২ বলে ৮২ রানের জুটি। স্প্রিঙ্গারের ওই ওভারেই দুটি চার মারেন আসালাঙ্কা। মাত্র ২৯ বলে ফিফটি করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে শামারের বল ছক্কায় ওড়ান লঙ্কান অধিনায়ক। ইনিংসের দশ বল বাকি থাকতে আসালাঙ্কাকে ফেরান আলজারি জোসেফ। ৯ চারে ৩৫ বলে ৫৯ রান করেন তিনি। শেষ দিকে ৯ বলে ১৭ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন প্রায় ২১ মাস পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা ভানুকা রাজাপাকসা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন শেফার্ড।
রান তাড়ায় দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন কিং ও লুইস। তাদের তাণ্ডবে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭৪ রান তুলে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ২৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে জুটির রান। গতি আরও বাড়িয়ে কেবল ৪৯ বলে তুলে নেয় একশ। কিং পঞ্চাশ ছুঁতে খেলেন ২৫ বল। দুই বছর পর দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা লুইসের লাগে ২৭ বল। ক্যারিয়ারের একাদশ পঞ্চাশ করেই ফেরেন লুইস। ২৮ বলে খেলা বাঁহাতি এই ওপেনারের ৫০ রানের ইনিংস গড়া চারটি ছক্কা ও পাঁচটি চারে।
শেই হোপের দ্রুত বিদায়ের পর ফেরেন কিংও। ৩৩ বলে খেলা তার ৬৩ রানের ইনিংস সাজানো এক ছক্কা ও ১১ চারে। রভম্যান পাওয়েল ও রোস্টন চেইসের দ্রুত বিদায়ে নাটকীয়তার একটু আশা জেগেছিল। কিন্তু তেমন কিছু হতে দেননি রাদারফোর্ড। ঠাণ্ডা মাথার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তিনি দলকে এনে দেন দারুণ জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৭৯/৭ (নিসাঙ্কা ১১, কুসাল মেন্ডিস ১৯, কুসাল পেরেরা ৬, কামিন্দু ৫১, আসালাঙ্কা ৫৯, রাজাপাকসা ১৯, হাসারাঙ্গা ১, উইক্রামাসিংহে ৪*, থিকশানা ৪*; আলজারি ৪-০-৪০-১, শামার ৪-০-২৭-১, শেফার্ড ৪-০-৩৯-২, চেইস ৪-০-২৯-০, মোটি ২-০-১৬-১, স্প্রিঙ্গার ২-০-২৫-১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯.১ ওভারে ১৮০/৫ (কিং ৬৩, লুইস ৫০, হোপ ৭, চেইস ১৯, পাওয়েল ১৩, রাদারফোর্ড ১৪*, শেফার্ড ১*; উইক্রামাসিংহে ২-০-২৭-০, আসিথা ৪-০-৩৭-০, থিকশানা ৪-০-৩১-১, হাসারাঙ্গা ৪-০-৩৮-১, পাথিরানা ৩.১-০-২৭-২, কামিন্দু ২-০-১৪-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-তে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ