
আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ ইরান বর্তমানে তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থগিত রেখেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ইরান বর্তমানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থগিত রেখেছে। গত জুনের সংঘাতে আমাদের পরমাণু প্রকল্প সংক্রান্ত স্থাপনাগুলোর গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার পর থেকেই স্থগিত আছে সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি। ইরানের পররাষ্ট্রীমন্ত্রী বলেন, আমাদের কোনো গোপন বা অঘোষিত পরমাণু স্থাপনাও নেই। যেসব স্থাপনা আমাদের আছে, সেগুলোর তথ্য আমরা জাতিসংঘকে দিয়েছি এবং এসব স্থাপনা জাতিসংঘের নজরদারির মধ্যে আছে।
গত ৬ জুন জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) এক বিবৃতিতে জানায়, ইরানের কাছে কমপক্ষে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম আছে এবং এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা বা সমৃদ্ধতার মান ৬০ শতাংশ। যদি বিশুদ্ধতার মান ৯০ শতাংশে উন্নীতি করা যায়, তাহলে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম দিয়ে পরমাণু বোমা তৈরি করা সম্ভব।
ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ফার্দো, নান্তাজ এবং ইস্ফাহান— এই তিনটি শহরে অবস্থিত। আইএইএ-এর বিবৃতি প্রদানের ৬ দিনের মাথায় ১২ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামলার কারণ হিসেবে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ইরানের সঙ্গে যুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র। পরে ২৪ জুন যুদ্ধবিরতি হয় ইরান, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
তবে ১২ দিনের সংঘাতে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বরে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি প্রকল্পের প্রধান মোহাম্মদ এসলামি স্কাই নিউজকে জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল- মার্কিন হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। এদিকে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরাঘচি জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ও বেসমারিক খাতে পরমাণু শক্তির ব্যবহার ইরানের ন্যায়সঙ্গত অধিকার এবং নিজেদের অধিকারের প্রশ্নে তেহরান অনড় অবস্থানে থাকবে।
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু সমৃদ্ধকরণ এবং শক্তির ব্যবহার ইরানের ন্যায়সঙ্গত অধিকার এ প্রশ্নে কোনো প্রকার আপস ইরান করবে না। আমরা আমাদের অধিকারের চর্চা করব এবং আশা করব যে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের ব্যাপারটি বুঝবে এবং স্বীকৃতি দেবে।
